আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যাওয়ার পর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জব্দ করে পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ।
এতে নগদ অর্থের চরম ঘাটতিতে পড়ে আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো। জনগণের বেতন আটকে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য আকাশচুম্বী। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে দেশটির বহু মানুষের।
এমন বাস্তবতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ ছাড় দিতে বিশ্বকে চাপ দিচ্ছে তালেবান সরকার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের ব্যাংকে আফগানিস্তানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পড়ে আছে।
আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ হাকমল বলেন, ‘মানবিক সহায়তা আমরা যা পেয়েছি, তা খুবই অপ্রতুল। আমাদের আরও সহায়তা প্রয়োজন।’
তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে পড়ে থাকা অর্থের মালিক আফগান জনগণ। আমাদের অর্থ আমাদের ফেরত দাও।
‘আফগান জনগণের অর্থ জব্দ করা অনৈতিক। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও মূল্যবোধের লঙ্ঘন।’
আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড মেম্বার শাহ মেহরাবি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়া ঠেকাতে জার্মানিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর রিজার্ভে থাকা আফগানিস্তানের শেয়ার ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। নয়তো ইউরোপের উদ্দেশে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষরা পাড়ি দিতে পারে। ‘
তিনি বলেন. ‘আফগানিস্তান বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকে অর্থের পরিমাণ কমে আসছে। এ বছর পর্যন্ত চলার মতো অর্থ ব্যাংকের রয়েছে। কিন্তু এরপর কী হবে?
‘আফগানিস্তান তার রিজার্ভের অর্থ না পেলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউরোপ। কারণ দারিদ্র্যপীড়িত মানুষ একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে দেশত্যাগ করে ইউরোপেই যাবে।’
মেহরাবির আশা, প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার তহবিলের সিংহভাগ ছাড়া হবে না বলে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জানালেও ইউরোপীয় দেশগুলো তা নাও করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন সংকট মোকাবিলায় প্রতি মাসে আফগানিস্তানের দেড় শ মিলিয়ন ডলার দরকার। এতে স্থানীয় মুদ্রা ও দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যাবে।
‘আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ যদি না ছাড়া হয়, তাহলে আফগান আমদানিকারকরা তাদের চালানের অর্থ শোধ করতে পারবেন না। তখন ব্যাংকগুলো ধসে পড়তে শুরু করবে। খাদ্য ঘাটতি দেখা যাবে। মুদি দোকানে কোনো খাবার পাওয়া যাবে না।’