বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় নারী রাখছে না পশ্চিমারাই

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:০১

আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কর্মকর্তা হিদার বার বলেন, ‘বিদেশি দেশ বিশেষ করে সহায়তা সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কেবল পুরুষপ্রধান বিশ্ব তৈরি করতে চাইছে তালেবান। গোষ্ঠীটির এই চিন্তাধারা যে স্বাভাবিক নয়, তা আমাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের জানান দেয়া উচিত।’

আফগানিস্তানে তালেবান তাদের সরকার গঠনের আগে থেকে পশ্চিমা বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো বারবার গোষ্ঠীটির প্রতি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ে আসে।

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর বিভিন্ন সময় নারীসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকারও করে।

নিজেদের ৩৩ নেতা নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে শেষ পর্যন্ত একজন নারীকেও রাখেনি তালেবান। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী তুমুল সমালোচনা হয়।

তালেবানের ওই পদক্ষেপের সমালোচনায় মুখর থাকা বৈশ্বিক ক্ষমতাধর দেশ ও সহায়তা সংস্থাগুলো এখন উল্টো ব্যাপক সমালোচনার মুখে। কারণ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তালেবান সরকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক একাধিক বৈঠকে ওই সব দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদলে কোনো নারীই ছিলেন না।

পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে গত দুই মাসে বেশ কয়েকবার বলা হয়, তালেবানের উচিত আফগান নারীদের তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া। আর তা দিতে ব্যর্থ হলে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার পথ কঠিন হবে।

আগস্টে কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। এর কয়েক সপ্তাহ পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি।

সরকার গঠনের প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো দেশের স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি তালেবান। এ নিয়ে চাপেও রয়েছে তারা। কারণ স্বীকৃতি না পাওয়ায় আশানুরূপ অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা পাচ্ছে না আফগানিস্তান।

এমন পরিস্থিতিতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, যারা তালেবানকে নারী অধিকারের পক্ষে কাজ করার উপদেশ দিচ্ছে, তারা নিজেরা এ বিষয়ে কতটুকু আন্তরিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আফগানিস্তানের জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা আফগান ইনডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের (এআইএইচআরসি) নির্বাসিত প্রধান শেহেরজাদ আকবর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাওয়া তালেবান সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশ ও সংস্থার বৈঠকে জ্যেষ্ঠ নারী কর্মকর্তা থাকা উচিত। ওই সব বৈঠকে নারীদের বাদ দেয়া ঠিক নয়।’

বিভিন্ন দেশের সরকার ও সহায়তা সংস্থার উদ্দেশে আকবর টুইটবার্তায় বলেন, ‘তালেবান তাদের সরকারে নারী প্রতিনিধি বাদ দিয়েছে। আপনারা একই ধরনের কাজ করে তালেবানের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেবেন না।’

আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কর্মকর্তা হিদার বার বলেন, ‘বিদেশি দেশ বিশেষ করে সহায়তা সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কেবল পুরুষপ্রধান বিশ্ব তৈরি করতে চাইছে তালেবান। গোষ্ঠীটির এই চিন্তাধারা যে স্বাভাবিক নয়, তা আমাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের জানান দেয়া উচিত।’

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তালেবান। ওই সব ছবির একটিতেও কোনো নারীকে দেখা যায়নি।

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্যের বিশেষ দূত সাইমন গ্যাসের সঙ্গে বৈঠক করেন তালেবানের উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল গনি বারাদার।

যুক্তরাজ্যের এক কর্মকর্তা জানান, বিশেষ দূত ও মিশনপ্রধান দুজনই পুরুষ। এটি কাকতালীয় ঘটনা।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে ছাড়েননি গত বছর দোহায় তৎকালীন আফগান সরকার ও তালেবানের ব্যর্থ শান্তি আলোচনার অন্যতম অংশগ্রহণকারী ফৌজিয়া কুফি।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বনেতারা যখন নারী অধিকারের কথা বলেন, তখন তাদের সে অনুযায়ী কাজ করা উচিত।

‘কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের নারী অধিকার পক্ষে অবস্থান দেখাতে হবে। এটি কোনো রাজনৈতিক বিবৃতি নয়।’

সমালোচনার জবাবে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস, জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, কাবুলে তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে তারা তাদের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে গঠিত ছোট প্রতিনিধিদল পাঠায়। কাকতালীয়ভাবে তারা সবাই পুরুষ।

এ বিভাগের আরো খবর