বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভালোবেসে বিয়ে করে প্রাসাদ থেকে এক কক্ষের ঘরে রাজকন্যা

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ২১:১৭

কলেজকালীন প্রেমিককে বিয়ের জন্য রাজকীয় মর্যাদা ত্যাগের মাধ্যমে এক ভিন্ন জীবন বেছে নিয়েছেন মাকো। জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশ নেয়ার পালা শেষ হচ্ছে, বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে বৈঠকও আর করতে হবে না। মাকোর কোনো সন্তানও রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য হবে না। রাজকুমারী হিসেবে মাকোর বিয়ে হলে ১৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পেতেন তিনি। জাপানের রাজপরিবারের নারী সদস্যদের জন্য এটাই নিয়ম। কোমুরোকে বিয়ে করতে রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের এই অর্থও ত্যাগ করেছেন মাকো।

রাজপরিবারের সদস্য হয়ে ভালোবেসেছেন সাধারণ পরিবারের ছেলেকে। নানা ঘাত-প্রতিঘাত আর বাধা পার করে বিয়েও করেছেন তাকে। স্বেচ্ছায় ছেড়েছেন পরিবার আর রাজকীয় মর্যাদা। এবার ছাড়তে হলো রাজপ্রাসাদও।

ভাইস নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জাপানের সাবেক রাজকন্যা মাকো দেশও ছাড়ছেন, যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে। টোকিও রাজপ্রাসাদ থেকে নিউইয়র্কে এক কক্ষের একটি অ্যাপার্টমেন্ট হবে তার নতুন ঠিকানা।

প্রেমিকের সঙ্গে বাগদানের ঘোষণা দেয়ার চার বছর পর গাঁটছড়া বেঁধেছেন মাকো। কলেজবন্ধু কেই কোমুরোর সঙ্গে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তিনি। জানিয়েছেন, নিজের রাজমর্যাদা ত্যাগ করে হলেও রাজত্ববিহীন প্রেমিককে বিয়ে করতে পেরে তিনি কৃতজ্ঞ।

জাপানের রাজধানী টোকিওর একটি রেজিস্ট্রি অফিসে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে আইনগতভাবে মাকো-কোমুরোর বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন রাজপরিবারের প্রতিনিধিরা।

রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়ের জাঁকজমক আয়োজনের প্রায় কিছুই ছিল না এ বিয়েতে।

জাপানের আইন অনুযায়ী, রাজপরিবারের কোনো নারী সদস্য সাধারণ পরিবারের কাউকে বিয়ে করতে চাইলে তাকে রাজকীয় মর্যাদা ত্যাগ করতে হয়।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ২০১৭ সালের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন নবদম্পতি। সংবাদ সম্মেলনের জন্য একটি ঘর ভাড়া করতে হয়েছিল তাদের।

রাজকন্যার বদলে প্রথমবার একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে প্রকাশ্যে এসে জাপানের জনগণের উদ্দেশে মাকো বলেন, ‘আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।’

স্বামী কোমুরো তার বক্তব্য শুরুই করেন ‘আমি মাকোকে ভালোবাসি’ বলে। তিনি বলেন, ‘আমার একটামাত্র জীবন। আর সেটা আমি কাটাতে চাই আমার ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে।’

কোমুরো পরিবারের আর্থিক হিসাবজনিত জটিলতার কারণে এ বিয়ের নিবন্ধন আটকে ছিল প্রায় চার বছর। পুরো সময়ে সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন তারা।

বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল, কোমুরোর মা একসময় নিজের সাবেক বাগদত্তের কাছ থেকে ৩৬ হাজার ডলার ধার নিয়েছিলেন এবং ফেরত দেননি।

এ ঘটনায় মাকো-কোমুরার বিয়ের বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন কোমুরোর সততা ও উদ্দেশ্য নিয়ে। তারা কোমুরোকে অর্থলোভী আখ্যা দিয়েছিলেন।

সংবাদমাধ্যমের তীব্র নজরদারির কারণে শুধু তাদের বিয়ে বিলম্বিতই হয়নি, মাকো মানসিকভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন। সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ার একপর্যায়ে পিটিএসডিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন সাবেক রাজকুমারী।

তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পর এই দম্পতি জানিয়েছেন, অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে সামনে এগিয়ে যাবেন তারা। জাপান ছেড়ে নতুন দেশে স্থায়ী হবেন।

মাকো বলেন, ‘একসঙ্গে একটি নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছি আমরা। নতুন ধরনের কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ব। কিন্তু নিজেদের শক্তি এক করে দুজন একসঙ্গে এই পথে হাঁটব। অতীতে সব সময় এটাই করেছি, ভবিষ্যতেও করব।’

অন্যদিকে বিয়েতে বাধা পড়ার মতো ‘সমস্যার কারণ’ হওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন কোমুরো। তবে দীর্ঘ এ সময়ে যারা এ জুটিকে সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদও জানান তিনি।

৩০ বছর বয়সী আইনজীবী কোমুরো বলেন, ‘মাকোর কারণেই তার সঙ্গে নিজের ভবিষ্যৎ ভাগাভাগি করে নেয়ার ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে আমার। মনোবল আরও বাড়িয়েছেন তারা, যারা আমাদের পক্ষে ছিলেন।’

কলেজকালীন প্রেমিককে বিয়ের জন্য রাজকীয় মর্যাদা ত্যাগের মাধ্যমে এক ভিন্ন জীবন বেছে নিয়েছেন মাকো। জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশ নেয়ার পালা শেষ হচ্ছে, বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে বৈঠকও আর করতে হবে না। মাকোর কোনো সন্তানও রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য হবে না।

রাজকুমারী হিসেবে মাকোর বিয়ে হলে ১৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পেতেন তিনি। জাপানের রাজপরিবারের নারী সদস্যদের জন্য এটাই নিয়ম। কোমুরোকে বিয়ে করতে রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের এই অর্থও ত্যাগ করেছেন মাকো।

নবদম্পতির ইচ্ছা, একসঙ্গে শান্তির আবাস গড়ে তুলবেন তারা, সম্পর্কের উষ্ণতা হবে যার ভিত্তি।

নতুন আবাসস্থল কোথায় হবে, সে বিষয়টি খোলাসা করেননি মাকো-কোমুরো।

কিন্তু জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে চলে যাওয়ার আগে আপাতত টোকিওর একটি অ্যাপার্টমেন্টে বাসা বাঁধবেন তারা। আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিতে দুজনই চাকরি করবেন।

এতদিন টোকিওতে আকাসাকা এস্টেট নামের একটি রাজকীয় প্রাসাদে থাকতেন মাকো।

সাবেক রাজকন্যা ও বর্তমানে মাকো কোমুরো বলেন, ‘ভালোবাসাকেই প্রাধান্য দিয়েছিল। কেই কোমুরোর বিনিময়ে সবকিছুই নগণ্য।’

এ বিভাগের আরো খবর