বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দামেস্কে বইয়ের দোকান বন্ধে ব্যাহত বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:৪০

দামেস্কের অন্যতম পুরোনো বইয়ের দোকানের মালিক ৭১ বছর বয়সী মোহাম্মদ সালেম আল-নাউরি বলেন, ‘মানুষের হাতে এখন বই কেনার অর্থ নেই। আর বইয়ের দোকান খোলা রাখার খরচ বেশির ভাগ মালিকের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়।’

বইয়ের দোকান ও প্রকাশনী সংস্থা একসময় সিরিয়ার বুদ্ধিজীবী মহলের বাতিঘর ছিল। আজ আর তা নেই। দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধের কারণে দেশটির রাজধানী দামেস্কের বইয়ের দোকানগুলোতে একে একে জায়গা করে নিয়েছে জুতার দোকান ও মানি এক্সচেঞ্জ অফিস।

আরব বিশ্বে জ্ঞানচর্চার অন্যতম পীঠস্থান ছিল দামেস্ক। শহরটির অলিগলিতে বইয়ের দোকানের দেখা মিলত। ছিল মূল ও অনুবাদ করা বইয়ের প্রকাশনা ও বিতরণ প্রতিষ্ঠান। ওইসব দোকানে জ্ঞানপিপাসু সিরীয়দের ভিড় লেগেই থাকত। এখন যা কেবলই ইতিহাস।

এক দশক দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ, টানা অর্থনৈতিক সংকট ও সৃজনশীল মানুষের দেশত্যাগ সিরিয়ার বুদ্ধিজীবীপাড়ায় কবরের শূন্যতা এনে দিয়েছে।

দামেস্কের অন্যতম পুরোনো বইয়ের দোকানের মালিক ৭১ বছর বয়সী মোহাম্মদ সালেম আল-নাউরি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘মানুষের হাতে এখন বই কেনার অর্থ নেই। আর বইয়ের দোকান খোলা রাখার খরচ বেশির ভাগ মালিকের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়।’

১৯৭০ সালে স্থাপিত দামেস্কের আইকনিক বইয়ের দোকান নোবেল বুকশপ গত মাসে বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৩৯ সালে স্থাপিত আরেক বইয়ের দোকান আল-ইয়াকজা সাত বছর আগে বন্ধ করা হয়। সে জায়গায় ঠাঁই হয়েছে জুতার দোকানের।

চার দশক আগে দামেস্ক শহরে উদ্বোধন হয় মায়সালুন বুকশপের। দোকানটির জায়গায় এখন মানি একচেঞ্জের একটি অফিস পাওয়া যাবে।

আর যেকোনো সময় একই পরিণতি দেখতে যাচ্ছে ১৯৩০ সালে স্থাপিত আল-নাউরি বুকস্টোর।

আল-নাউরি বুকস্টোরের মালিক আল-নাউরি বলেন, ‘আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য এই দোকানের প্রয়োজন। তবে অন্যান্য বইয়ের দোকানের মতো আমাদেরও এটি দুঃখজনকভাবে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’

দামেস্কের মধ্যাঞ্চলে নাউরি পরিবারের এ মুহূর্তে দুটি বইয়ের দোকান রয়েছে।

তিন বছর আগে বিক্রি কম ও খরচ বেড়ে যাওয়ায় ২০০০ সালে স্থাপন করা তৃতীয় বইয়ের দোকানটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ওই পরিবার।

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সাংস্কৃতিক বিকাশের চূড়ায় পৌঁছায় দামেস্ক। তবে সেই দিন বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন ৪০ বছর বয়সী আল-ইয়াকজা বুকস্টোরের একসময়ের স্বত্বাধিকারী সামি হামদান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক ও বৃদ্ধিবৃত্তিক সব অর্জন যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে। এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’

হামদান বলেন, ‘দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। সিরীয় পাউন্ডের মান পড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। এ পরিস্থিতিতে কেউই বইয়ের দোকানে বিনিয়োগ করবে না।’

দামেস্কের প্রকাশনী সংস্থা দার আউসামার মালিক ৭০ বছর বয়সী খলিল হাদ্দাদ বলেন, ‘বই সিরীয়দের কাছে বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও বাসস্থানের সংস্থান করতেই হিমশিম খাচ্ছে তারা।

‘এ ছাড়া মুদ্রণ খরচ বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন না থাকায় লজিস্টিক্যাল জটিলতার কারণে বই প্রকাশের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর