আফগানিস্তানজুড়ে চলমান চরম ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নিরসনে কাজের বিনিময়ে গম কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তালেবান সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় দেশটির হাজার হাজার মানুষকে গম দেয়া হবে।
তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ রোববার সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
রাজধানী কাবুলের দক্ষিণাঞ্চলে আয়োজিত ওই সম্মেলনে মুজাহিদ বলেন, ‘আফগানিস্তানের প্রধান শহর ও গ্রামে কাজের বিনিময়ে গম কর্মসূচি পরিচালিত হবে। শুধু কাবুলেই ৪০ হাজার মানুষকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গম পেতে শ্রমিকদের অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে দারিদ্র্য, খরা, বিদ্যুৎ না থাকাসহ ধসে পড়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দেখছে আফগানরা। আসন্ন শীতে তাদের দুর্দশা আরও বাড়বে বৈ কমবে না বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
তালেবানের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় দেশটির শ্রমিকরা নেই। যেসব আফগান সম্প্রতি বেকার হন ও শীতের সময় অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছেন, কেবল তারাই এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।
দুই মাস দীর্ঘ এ কর্মসূচি চলাকালে কাবুলে ১১ হাজার ৬০০ টন গম বিতরণ করা হবে। আর হেরাত, জালালাবাদ, কান্দাহার, মাজার-ই-শরিফ ও পল-ই-খোমরিসহ অন্যান্য শহরে প্রায় ৫৫ হাজার টন গম দেয়া হবে।
নদী খননসহ অন্যান্য কার্যক্রম ওই কর্মসূচির মধ্যে রাখা হয়েছে।
কাবুলের গ্রামাঞ্চলীয় রিশ খর এলাকায় ছোট একটি খাল খননের মাধ্যমে ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তালেবান মুখপাত্র মুজাহিদ, কৃষিমন্ত্রী আব্দুল রহমান রশিদ, কাবুলের মেয়র হামদুল্লাহ নোমানিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। ক্ষমতা দখলের সপ্তাহখানেক পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তালেবান।
তবে সরকার গঠনের দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও কোনো দেশ এখন পর্যন্ত তালেবানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
এ ছাড়া তালেবান ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আফগানিস্তানের সম্পদ জব্দ করে। এতে দেশটির অর্থনীতি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।
আফগানিস্তানের চরম অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকট কিছুটা লাঘবে শুক্রবার পাঁচ বিলিয়ন রুপির মানবিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।