জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর নির্বাচন হবে এবং পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদাও ফিরিয়ে দেয়া হবে কাশ্মীরকে। এমন আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শনিবার জম্মু-কাশ্মীরে তিন দিনের সফরে গিয়ে এমনটি বলেন ক্ষমতাসীন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
দুই বছর আগে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেবার পর অমিত শাহর প্রথম উপত্যকা সফর এটি।
এদিন শ্রীনগরে এক সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কাশ্মীরের যুবকদের ওপর সন্ত্রাসের ছায়া রয়েছে। আজ কাশ্মীরের তরুণরা পরিবর্তনের কথা বলছে। যুবসমাজকে খেলাধুলা ও পর্যটনের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছি আমরা। খেলা নিজেই তরুণদের হারতে এবং জিততে শেখায়।’
তবে অমিত শাহ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে শক্তিশালী আক্রমণ প্রয়োজন।’
এদিন শ্রীনগরে পৌঁছেই নিরাপত্তাসংক্রান্ত একটি উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দেন অমিত শাহ। এই বৈঠকে একাধিক নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে এই বৈঠক চলে। বৈঠকে নিরাপত্তা বাহিনীকে সন্ত্রাস নির্মূলে নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি অভিযান, মৌলবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকি প্রতিহত, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধ এবং সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানো নিয়ে আলোচনা হয়।
অমিত শাহ স্পষ্টভাবে বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করা উচিত সব সংস্থার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শেষ যুদ্ধে তাদের জয়ী হতে হবে।
শাহ তার সফরে সেখানে অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন।
অন্যদিকে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন।
পিডিপি সভাপতি মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানোর জন্য নাটক চলছে। প্রকৃত পরিস্থিতি এর থেকে বেশ ভিন্ন। শাহের সফরের আগে সাত শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে।’
শাহের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কটাক্ষ করে মেহবুবা বলেন, ‘এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কাজ কংগ্রেস সরকারের। তিনি বলেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরে সমস্যা বহুগুণ বেড়েছে।’
অমিত শাহের এই সফরকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তায় শার্প শুটার, স্নাইপার এমনকি ড্রোনও মোতায়েন করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শাহের সফরটিও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা টার্গেট কিলিংয়ের আওতায় অকাশ্মীরি এবং সংখ্যালঘুদের টার্গেট করছে। পাশাপাশি অনেক স্থানীয় যুবকের সন্ত্রাসী শিবিরে যাওয়ার খবরও রয়েছে।