ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার করোনা টিকার ১০০ কোটি ডোজের কঠিন তবে অসাধারণ লক্ষ্য অর্জন করেছে ভারত। এ অর্জনের পেছনে শক্তি হিসেবে কাজ করেছে ১৩০ কোটি দেশবাসীর কর্তব্যবোধ। এ সাফল্য ভারতের সাফল্য, প্রতিটি দেশবাসীর সাফল্য।’
দেশবাসীর উদ্দেশে শুক্রবার দেয়া ভাষণে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
করোনাকালে মানুষের সংহতিতে শক্তি জোগাতে তালি ও থালি বাজানোর কথাও ভাষণে উল্লেখ করেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জনসাধারণের অংশগ্রহণকে আমাদের প্রথম শক্তি করে তুলি।
‘দেশ মানুষের সংহতিতে শক্তি দিতে তালি বাজিয়েছিল, থালি বাজিয়েছিল, প্রদীপ জ্বালিয়েছিল। সে সময় কিছু লোক বলেছিল, এ রোগ কি থালি বাজালেই পালিয়ে যাবে? আমরা সবাই এর মধ্যে দেশের ঐক্য ও যৌথ শক্তির জাগরণ দেখেছি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ভারতের টিকাকরণ কর্মসূচিকে গোটা বিশ্বের টিকাকরণ কর্মসূচির সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। যেভাবে আমাদের দেশে দ্রুতগতিতে ১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকা দেয়া হয়েছে, তার প্রশংসাও হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
‘তবে এ বিশ্লেষণে একটা কথা অনেক সময়ই ভুলে যাওয়া হয়, এর সূচনা কোথা থেকে হলো।
‘বিশ্বের অধিকাংশ দেশে দীর্ঘ সময় ধরে টিকা উৎপাদন ও গবেষণা চলছে। ভারত এতদিন ওই দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল।
‘এ কারণে করোনা সংক্রমণ যখন মহামারির রূপ নিল, তখন ভারতকে নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল, ভারত কি এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে পারবে?
‘ভারতের বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য টিকা কেনার টাকা কোথা থেকে আসবে, ভারত আদৌ করোনা টিকা পাবে কি না, পেলেও এত মানুষকে টিকা দিতে পারবে কি না- এমন প্রশ্ন ওঠে।
‘আজ ভারত ১০০ কোটি ডোজ টিকাকরণের মাধ্যমে ওইসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। দেশেই টিকা উৎপাদন করা হয়েছে এবং দেশবাসীকে তা বিনা মূল্যে দেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও বলেন, ‘১০০ কোটি টিকাকরণের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ওষুধ উৎপাদনের পীঠস্থান হিসেবে ভারতের প্রতি বিশ্বের স্বীকৃতি আরও মজবুত হয়েছে।
‘গোটা বিশ্বই এখন ভারতের এ শক্তি দেখছে এবং উপলব্ধি করছে।’
তিনি বলেন, “ভারতের টিকাকরণ কর্মসূচি ‘সবার সঙ্গে, সবার উন্নতি, সবার চেষ্টা’ স্লোগানের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়।
‘‘গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা সবার চাহিদাকে প্রাধান্য দিই। এ কারণে সবার সঙ্গে, সবার উন্নতি- এ নীতি অনুসরণ করে চলি আমরা।”
টিকাকরণ নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা ও দ্বিধা সম্পর্কে মোদি বলেন, ‘বিশ্বের বড় বড় দেশ এখনও টিকাকরণ নিয়ে জনগণের মধ্যে যে দ্বিধা রয়েছে, তার সঙ্গে লড়াই করছে।
‘সেখানেই ভারত ১০০ কোটি টিকাকরণের সাফল্যের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিল, কীভাবে টিকাকরণ নিয়ে সংকোচের সঙ্গে লড়াই করতে হয়।
‘বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী শক্তির ওপর ভরসা রেখে ভারত আজ এ সাফল্যকে ছুঁতে পেরেছে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের টিকাকরণ কর্মসূচিতে কোনোভাবে ভিআইপি সংস্কৃতির প্রভাব পড়তে দেয়া হয়নি। সবাইকে সমানভাবে গণ্য করা হয়েছে।