জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) বিয়ের পর বাবার নাম ফেলে দিয়ে স্বামীর নাম রাখার নারীদের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেখান থেকে সরে আসছে পাকিস্তান। নারীরা চাইলে এখন বিয়ের পরও জাতীয় পরিচয়পত্রে তাদের বাবার নাম রাখতে পারবেন।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডাটাবেজ অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অথরিটির (নাদরা) চেয়ারপারসন তারিক মালিক শুক্রবার ১৪তম বার্ষিক গ্রামীণ নারী সম্মেলনের শেষ অধিবেশনে এ ঘোষণা দেন।
সম্মেলনে মালিক বলেন, ‘স্বামীর নাম রাখার বাধ্যতামূলক অনানুষ্ঠানিক এই নীতি আমরা বাতিল করছি। জাতীয় পরিচয়পত্রে বিয়ের পর নারীরা বাবার নাম রাখবেন নাকি স্বামীর নাম রাখবেন- এ সিদ্ধান্ত এখন তাদের।
‘এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে নারীর, তার স্বামীর নয়।’
নাদরার চেয়ারপারসন মালিক বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে বিয়ের পর বাবার নাম বাদ দিয়ে স্বামীর নাম রাখার সংস্কৃতি নীতি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা করেছেন।
‘বিয়ের পর পরিচয়পত্রে স্বামীর নাম রাখতেই হবে- এমন কোনো কিছু আইনে বলা নেই। স্বামীর অনুমতি নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র হালনাগাদ করতে নারীদের বাধ্য করার কথাও কেউ বলেনি। তবে অনানুষ্ঠানিক এ নিয়ম আমাদের দেশে চলে আসছে।’
মালিক বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র প্লাস্টিকের কোনো টুকরা নয়। এটি ভোট দেয়া, মামলা করা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধা দিতে সহায়তা করে। এটি নারী ক্ষমতায়নের অন্যতম উৎস।’
মালিক রোববার ডনকে বলেন, ‘আগের নীতি অনুযায়ী, বিয়ের পর নারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামীর নাম যুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
‘নতুন নীতিতে নারীরা বিয়ের পর বাবার নামই রাখবেন নাকি এর জায়গায় স্বামীর নাম বসাবেন, এটা এখন তাদের ওপর নির্ভর করছে।
‘এমনকি বিয়ের পর নারীরা চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নামের সঙ্গে স্বামীর নাম যুক্ত করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে তার নিচে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের বাবার নামও রাখতে হবে।’
‘এটি যুগান্তকারী এক পরিবর্তন। এটি জাতীয় পরিচয়পত্রকে ঘিরে নারীদের তাদের মর্জিমাফিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।’