ক্যারিবীয় দেশ হাইতিতে শিশুসহ যুক্তরাষ্ট্রের ১৭ জন নাগরিক অপহৃত হয়েছেন। অপহৃতদের সবাই খ্রিষ্টান মিশনারি।
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় শনিবার একটি এতিমখানা থেকে বের হওয়ার সময় অপহরণের শিকার হন ওই মিশনারিরা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক মুখপাত্র অপহরণের খবর শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেননি বা এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
তিনি বলেন, ‘বিদেশে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।’
হাইতিতে অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাসও এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
হাইতি পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনা সম্পর্কে সরাসরি অবগত একটি প্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাছে ভয়েজ মেসেজ পাঠিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওভিত্তিক ক্রিস্টিয়ান এইড মিনিস্ট্রিজ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক মিনিটের বার্তায় বলা হয়, ‘বিশেষ প্রার্থনার জন্য এ সতর্কবার্তা। প্রার্থনা করুন যেন অপরাধী চক্রের সদস্যরা অনুতপ্ত হয়ে ফেরত আসে।’
ভয়েজ মেসেজটিতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির মাঠপর্যায়ের পরিচালক এ বিষয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে কাজ করছে।
আমেরিকা মহাদেশের দরিদ্রতম দেশ হাইতিতে সম্প্রতি পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে ওঠায় এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটায় গৃহহীন হয়েছে লাখো মানুষ।
সম্প্রতি হাইতিতে বিভিন্ন অপহরণকাণ্ডের পর অপরাধী চক্রের সদস্যরা হাজার থেকে শুরু করে ১০ লাখ ডলারের বেশিও মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
গত মাসে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে একটি গির্জার সামনে এক যাজককে হত্যা ও তার স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়। গত কিছুদিনে অপহৃত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন।
সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, হাইতির কেন্দ্রীয় পুলিশ ২০২১ সালের প্রথম আট মাসে কমপক্ষে ৩২৮ জনকে অপহরণের অভিযোগ পেয়েছে। ২০২০ সালজুড়ে এ সংখ্যা ছিল ২৩৪।
চলতি বছরের জুলাইয়ে হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোউসকে হত্যা ও রাজনীতিতে অস্থিরতা এবং আগস্টে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর পর অরাজকতা বাড়ে দেশটিতে।