বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আইএমএফের পরামর্শে পেট্রলের দাম বাড়েনি: পাকিস্তান

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:২৪

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের মূল্য বাড়াতে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য করেছে।’

ঋণসুবিধা ফের পাওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্র্রা তহবিল (আইএমএফ) ও পাকিস্তানের চলমান আলোচনার সঙ্গে সাম্প্রতিক পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন।

ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানি দূতাবাসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

তারিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্যের মূল্য বাড়াতে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য করেছে।’

শনিবার পেট্রল, ডিজেলসহ পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেয় পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের মূল্য প্রায় ৮৫ ডলার বাড়ানো হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর এটাই সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।

ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শনিবার থেকে পাকিস্তানিদের এক লিটার পেট্রল ১৩৭ দশমিক ৭৯ রুপি, প্রতি লিটার ডিজেল ১৩৪ দশমিক ৪৮ রুপি ও প্রতি লিটার কেরোসিন ১১০ দশমিক ২৬ রুপিতে কিনতে হচ্ছে।

পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের এত চড়া দাম এর আগে দেখেনি পাকিস্তান।

এদিকে পেট্রল, ডিজেল ও কেরোসিনের উচ্চমূল্যে ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার আইএমএফকে খুশি করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে সমালোচনা অনেকের।

ওই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী তারিন বলেন, ‘সরকার বুঝতে পেরেছে, কাঠামোগত পরিবর্তন ছাড়া শুল্ক বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।’

অবশ্য পাকিস্তানের সঙ্গে আইএমএফের আলোচনায় সংস্থাটির পরামর্শ বিবেচনা করার কথা স্বীকার করেছেন অর্থমন্ত্রী তারিন। মূল্যস্ফীতির বিষয়ে সংস্থাটির সঙ্গে কিছু কথাবার্তা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তারিন বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাতে শুল্ক বাড়াব, যাতে মূল্যস্ফীতি এক লাফে না বাড়ে।’

২০১৯ সালের জুলাইয়ে এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটির আওতায় পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে দেশটিকে ছয় বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ওই অর্থ ৩৯ মাস ধরে ধাপে ধাপে দেয়ার কথা থাকলেও দেশটিকে নতুন কিস্তি দিচ্ছে না সংস্থাটি।

ওয়াশিংটনে অবস্থানকালে ঋণসুবিধা ফের পাওযার বিষয়ে আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী তারিন।

অর্থমন্ত্রী ওয়াশিংটন থেকে নিউ ইয়র্কে যাওয়ার পর তার অর্থসচিব আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা জারি রেখেছেন।

পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের মূল্য না বাড়াতে শনিবার পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও সিনেটের সাবেক চেয়ারম্যান মিঞা রেজা রাব্বানি।

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রতি লিটার পেট্রলের মূল্য ৯ রুপি বাড়ানো হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের দাম এখন সর্বোচ্চ। পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সরকারকে দ্রুত বাতিল করতে হবে।’

রাব্বানি বলেন, ‘পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের বর্ধিত মূল্য জনসাধারণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাবে। সরকারে থাকা অভিজাত শ্রেণির জনগণকে আত্মহত্যা বা বিদ্রোহের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দাবি মেনে সরকার বিদ্যুৎ শুল্ক প্রতি ইউনিটে ১.৩৯ রুপি বাড়িয়েছে। বিদ্যুতের ওপর ৭৭ বিলিয়ন রুপি ভর্তুকি বাতিলের পর ওই শুল্ক এ পরিমাণে বাড়ানো হয়। সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে পিপিপি।’

পিপিপির এই নেতা জানান, রান্নার তেল ও ঘি ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। এখন প্রতি কেজি রান্নার তেল ও ঘিয়ের মূল্য যথাক্রমে ৩৯৯ ও ৪০৯ রুপি। টম্যাটো, আলু, খাসির মাংস, এলপিজিসহ ২২টি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য সম্প্রতি অনেক বেড়েছে।

রাব্বানি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত কয়েক দিন মার্কিন ডলারের মান রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ঋণের কারণে পণ্যের ওপর আরও কর বসাতে সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে আইএমএফ।’

এ ছাড়া পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পদত্যাগ দাবি করেন বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরীফ।

তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ শুল্ক ১৪ শতাংশ বৃদ্ধির পর জনগণের ওপর ‘পেট্রলবোমা’ ‘মিনি বাজেটের’ ধারাবাহিকতা।

"প্রধানমন্ত্রী ইমরানের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। তার পদত্যাগ জাতিকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। ‘মিনি বাজেট’ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক ব্যর্থতার প্রমাণ।”

এ বিভাগের আরো খবর