প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির ক্ষেত্রে বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করতে এক লাফে অনেকটাই এগিয়ে গেল ভারত সরকার। ৩০০ বছরের পুরোনো ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের পরিবর্তে সাতটি নতুন কোম্পানি তৈরির ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চলতি মাসের শুরুতেই সরকার ভেঙে দেয় অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড (ওএফবি)। কলকাতায় ১৭১২ সালে তৈরি ওএফবি ভারতের ৪১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির সরকারি ফ্যাক্টরি নিয়ন্ত্রণ করত। ওএফবিকে ১ অক্টোবর নিষ্ক্রিয় ঘোষণা করে সরকার।
এর পরিবর্তে শুক্রবার সাতটি নতুন প্রতিরক্ষা সংস্থার ঘোষণা করেন মোদি। দেশের ৪১টি অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিকে এদিন সরকার পরিচালিত সাতটি করপোরেট সংস্থায় রূপান্তরিত করা হয়। ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তিতে রূপান্তরিত করাই হবে এর লক্ষ্য।
মোদি বলেন, ‘গত সাত বছরে দেশ মেক ইন ইন্ডিয়া মন্ত্রের সঙ্গে নিজেদের সংকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করেছে। আজ দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যে স্বচ্ছতা, যে বিশ্বাস রয়েছে, যে তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজের সুবিধা রয়েছে তা আগে কোনো দিন ছিল না। স্বাধীনতার পর প্রথমবার আমাদের প্রতিরক্ষা বিভাগে এত সংস্কার হচ্ছে। এতে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’
যে সাতটি নতুন প্রতিরক্ষা সংস্থা হবে, সেগুলো হলো মিউনিশন ইন্ডিয়া লিমিটেড (এমআইএল), আরমার্ড ভেহিকেলস নিগম লিমিটেড (অবনি), অ্যাডভান্স উইপনস অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড (এডব্লুই ইন্ডিয়া), ট্রুপ কমফোর্টস লিমিটেড (টিসিএল), যন্ত্র ইন্ডিয়া লিমিটেড (ওয়াইআইএল), ইন্ডিয়া অপটেল লিমিটেড (আইওএল) ও গ্লিডার্স ইন্ডিয়া লিমিটেড (জিআইএল)।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংস্থাগুলো তৈরির সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল। এই নতুন সাতটি সংস্থা আগামী দিনে দেশের সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী ভিত তৈরি করবে।
ভারতীয় অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলোর গৌরবময় অতীতের কথা উল্লেখ করে মোদি জানান, এই সাতটি প্রতিরক্ষা সংস্থা পরিস্থিতি পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা পালন করবে। ইতিমধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সংস্থাগুলোকে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এই সংস্থাগুলোর প্রতি দেশের ক্রমবর্ধমান আস্থা প্রতিফলিত হয়েছে।
গত পাঁচ বছরে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।