যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও তুরস্কের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন নির্মাণ করছে ইসরায়েল। এই পাঁচ দেশ ড্রোন তৈরিতে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ড্রোন নির্মাণে আগামী দিনে সুপারপাওয়ার কে হবে, তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী।
ইসরায়েল তাদের নির্মিত ড্রোন মূলত সামরিক কাজে ব্যবহার করে। বিশেষ করে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য অঞ্চলে হামলার পাশাপাশি নজরদারির কাজেও ড্রোন ব্যবহার করে দেশটি।
তবে এবার সামরিক প্রয়োজন ছাড়াও পণ্যসামগ্রী ডেলিভারিসহ অন্যান্য কাজে ড্রোন ব্যবহার করতে যাচ্ছে ইসরায়েল।
আইসক্রিম, কোমল পানীয় ও জাপানের জনপ্রিয় খাবার সুশি ড্রোনের মাধ্যমে উড়িয়ে এসংক্রান্ত ছোটোখাটো একটা পরীক্ষাও সেরে ফেলেছে দেশটি।
চলতি সপ্তাহে তেল আবিবের সৈকতের আকাশে খাবার নিয়ে তিনটি ড্রোনকে উড়তে দেখা যায়। দুটি ড্রোনে ছিল সুশি আর একটিতে ছিল বিয়ারের কয়েকটি ক্যান।
ভবিষ্যতে ইসরায়েলের আকাশে ড্রোন চলাচল আরও বাড়বে। এতে যেন ড্রোনগুলোর মধ্যে ধাক্কাধাক্কি না হয়, এ জন্য নিজেদের দক্ষতা আরও উন্নত করছে ইসরায়েলের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
খাবারসহ ওই তিন ড্রোন ওড়ার সময় ট্রাফিক কন্ট্রোলের দায়িত্বে ছিল ইসরায়েলি কোম্পানি হাই ল্যান্ডার।
কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী অ্যালন আবেলসন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘একটি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ কোনো ব্যাপারই নয়।
‘আমরা অনেক ড্রোনের কথা বলছি। ড্রোন প্রস্তুতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব নির্মাণ করবে। মূল বিষয় হচ্ছে, আকাশে ওড়ার সময় সেগুলো আমাদের সফটওয়্যারের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে, ড্রোনগুলোর মধ্যে যেন কোনো সংঘর্ষ না হয়।’
ইসরায়েলের ড্রোন প্রযুক্তি উন্নত করতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ছয় মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ওই পরীক্ষা করা হয়।
ইসরায়েলের নতুন এই উদ্যোগের নেতৃত্বদানকারী ডেনিয়েলা পারটেম বলেন, ‘আগামী দিনে দেশের জনবহুল শহরের ওপর দিয়ে হাজার হাজার ড্রোন একসঙ্গে উড়বে। এসব ড্রোনের মাধ্যমে জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী, পুলিশের সেবাদানের পাশাপাশি খাবার ডেলিভারি দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ড্রোন নির্মাণের বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য ইসরায়েলে প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করা। কোনো একক কোম্পানিকে আধিপত্য বিস্তার করতে দেয়া হবে না।’
পারটেম আরও বলেন, ‘আমরা যদি সড়ক থেকে কিছু যানবাহন সরিয়ে আকাশে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে রাস্তায় যানজট কমবে। এ ছাড়া এতে বায়ুদূষণ কম হবে। পণ্যসামগ্রী নিরাপদে ও আরও ভালোভাবে আমরা ডেলিভারি দিতে পারব।’