বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বৈরুতে বিক্ষোভে গোলাগুলি, নিহত ৬

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:৪০

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে লেবাননের সেনাবাহিনী। বন্দুকধারীদের কমপক্ষে একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। বন্দুকধারীদের পরিচয় কিংবা কাদের নির্দেশে তারা গুলি চালিয়েছে- সেসব এখনও স্পষ্ট নয়। বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ ও সংগঠনটির মিত্র আমল সমর্থকদের প্রতি শান্ত থাকার এবং ‘কোনোরকম উস্কানির জবাব না দেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন হিজবুল্লাহর সমর্থকদের বিক্ষোভের সময় গোলাগুলিতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ছয়জনের। বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তকারী বিচারকের বিরুদ্ধে চলছিল ওই বিক্ষোভ।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈরুত জাস্টিস প্যালেস প্রাঙ্গণে বৃহস্পতিবার জড়ো হন কয়েক শ হিজবুল্লাহ সমর্থক। তাদের সবার পরনে ছিল কালো রঙের পোশাক।

বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তকারী বিচারক তারেক বিতারের পদত্যাগের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। তাদের অভিযোগ, তদন্তে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন বিচারক তারেক।

বিক্ষোভের ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী তাইয়ুন এলাকা থেকে গোলাগুলির তীব্র শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এতে ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রসের লেবানিজ শাখা জানিয়েছে, গুলিতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং আরও ২৫ জন আহত হয়েছে।

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে লেবাননের সেনাবাহিনী। বন্দুকধারীদের কমপক্ষে একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। বন্দুকধারীদের পরিচয় কিংবা কাদের নির্দেশে তারা গুলি চালিয়েছে- সেসব এখনও স্পষ্ট নয়।

জনগণের প্রতি শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। লেবাননকে সহিংস করে তোলার অপচেষ্টা হলে তা রুখে দেয়া হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

ঘটনাস্থল ত্যাগে বেসামরিক মানুষজনকে আহ্বান জানিয়েছে সেনাবাহিনী। কেউ গুলি করলেই সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দেবে বলেও জানানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ ও সংগঠনটির মিত্র আমল সমর্থকদের প্রতি শান্ত থাকার এবং ‘কোনোরকম উস্কানির জবাব না দেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।

ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখনও গোলাগুলি চলছে। গোলাগুলিতে আটকে পড়া বাসিন্দাদের পরিবারসহ নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে বেসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবকরা।

২০২০ সালের ৪ আগস্ট বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত নিয়ে লেবাননের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল। অনিরাপদে রাখা বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুত বিস্ফোরিত হয়ে প্রাণ যায় দুই শতাধিক মানুষের, আহত হয়েছিল সাড়ে ছয় হাজারের বেশি।

বৈরুত বন্দরে এ বিস্ফোরণের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ অপারমাণবিক বিস্ফোরণ এবং রাজনৈতিক সংকটপ্রবণ লেবাননের ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ঘটনা। ওই বিস্ফোরণে রাজধানী নগরীর কয়েকটি এলাকা পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল।

এ ঘটনায় সম্প্রতি উত্তেজনা আরও বাড়ে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হাসান নাসরাল্লাহ তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক তারেক বিতারের কঠোর সমালোচনা করার পর। তারেক ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হয়ে তদন্তের নামে অনেক কর্মকর্তাকে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন নাসরাল্লাহ।

বিচারক তারেক বিতার গত কয়েক মাস ধরে সাবেক লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীসহ বিগত সরকারের অনেক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার চেষ্টা করেছেন। এই নেতাদের অনেকেই হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র ও স্পিকার নাবিহ বেরি নেতৃত্বাধীন শিয়া গোষ্ঠী আমল মুভমেন্টের সদস্য।

লেবাননের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রধান মেজর জেনারেল আব্বাস ইব্রাহিম ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রধান মেজর জেনারেল টোনি সালিবার বিরুদ্ধেও সমন জারি করার চেষ্টা করেছিরেন তারেক বিতার। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শীর্ষ প্রতিরক্ষা পরিষদের অনুমতি না মেলায় তা সম্ভব হয়নি।

এখন পর্যন্ত কোনো সাবেক বা বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হননি।

তারেক বিতারের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন রয়েছে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকের অন এবং প্রধানমন্ত্রী মিকাতির। এর আগেও বিস্ফোরণের তদন্ত থেকে এক বিচারককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয়বার এমন কিছু ঘটার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মিকাতি।

এ অবস্থায় বিতারের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন মন্ত্রিসভায় থাকা হিজবুল্লাহ, আমল ও অন্যান্য সমর্থক গোষ্ঠীর সদস্যরা।

এ বিভাগের আরো খবর