কলম্বিয়ায় হাভানা সিনড্রমের সম্ভাব্য সংক্রমণ খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের কয়েকদিন বাকি থাকতেই এমন খবর প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজধানী বোগোতায় অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাসের এক কর্মী হাভানা সিনড্রমের উপসর্গে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি কানে অস্বস্তিকর শব্দ শুনছেন, ক্লান্তি ও মাথা ঘোরায় ভুগছেন।
২০১৬ সালে কিউবায় প্রথম শনাক্ত হয় হাভানা সিনড্রম। এরপর থেকে অসংখ্যবার যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের মধ্যে রোগটির উপসর্গ দেখা দেয়ার খবর মিলেছে।
হাভানা সিনড্রমের উৎস বা কারণ অজানা। অনেকে মনে করেন এটি কোনো ধরনের অস্ত্র।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত মঙ্গলবার প্রথম জানায়, কলম্বিয়ায় নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ফিলিপ গোল্ডবার্গের পাঠানো একটি ই-মেইলে বেশ কয়েকজন ‘ব্যাখ্যাবিহীন স্বাস্থ্য জটিলতা’ বা ইউএইচআইয়ে ভুগছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
‘হাভানা সিনড্রম’ বোঝাতে ‘ব্যাখ্যাবিহীন স্বাস্থ্য জটিলতা’ বা ইউএইচআই শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে এ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দুক নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, দেশটিতে হাভানা সিনড্রমের খবরের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আগামী সপ্তাহে বোগোতায় সফরের কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের।
গত আগস্টে ভিয়েতমানে দুই আমেরিকান কর্মকর্তা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়। এর জেরে সে সময় দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সফর বিলম্বিত হয়। ওই ঘটনাতেও হাভানা সিনড্রমের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
হাভানা সিনড্রমে আক্রান্ত আমেরিকান নাগরিকরা কানে তীব্র ও ব্যথাদায়ক শব্দ শোনার কথা জানান। এ উপসর্গে আক্রান্ত প্রায় ২০০ মানুষ কয়েক মাস ধরে ক্লান্তি ও মাথা ঘোরায় ভুগেছেন।
এ রোগে যারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়, তাদের অর্ধেকের বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর কর্মী।
জার্মানির বার্লিনেও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে গত শুক্রবার হাভানা সিনড্রমের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে।
এসব খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘রোগটির কারণ শনাক্তে এবং দোষীদের চিহ্নিতের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এর কয়েক ঘণ্টা আগেই হাভানা সিনড্রমবিষয়ক একটি নতুন আইনে অনুমোদন দেন বাইডেন। আইনটিতে এ রোগে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানে সিআইএ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।