কাগজ দেখালে তবেই প্রমাণ নাগরিকত্বের। এ ভাবনা থেকে দুর্গা এবার সপরিবারে শরণার্থী শিবিরে। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জীবনযন্ত্রণার ওপর আলোকপাত করে উল্টোডাঙ্গা বিধান সংঘের পূজার থিম ‘জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)’।
এ দেশে জন্ম হলেও, এ দেশে ভোট দিলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ‘ওরা উদ্বাস্তু, ওরা শরণার্থী’- এমন কথা শুনতে হয় সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে। কাগজ দেখালে প্রমাণ হয়, তারা ভারতীয়।
সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের শরণার্থী জীবনের যন্ত্রণার ছবি তাদের ৫৩তম পূজাবর্ষে ফুটিয়ে তুলেছে কলকাতার উল্টোডাঙ্গা বিধান সংঘের পূজা মণ্ডপ।
মণ্ডপ শিল্পী প্রশান্ত পাল নিজেই একজন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ। বংশপরম্পরা এ দেশে থাকার পরও প্রশান্তকে প্রায়ই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
প্রশান্ত বলেন, ‘আমার দাদু ওপার থেকে এসেছেন। আমার বাবার বয়স ৮৫ বছর। আমি ৪০ বছর পার করে ফেলেছি। আমার রাষ্ট্র আমাকে বলছে, কাগজ চাই।’
বিধান সংঘের মণ্ডপে দেবীদুর্গা শরণার্থী কন্যার বেশে থাকবেন। মাটি, কাঠ ও বাঁশের কারুকাজে সীমান্তবর্তী এলাকার শরণার্থী জীবন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এই মণ্ডপে।
পূজা কমিটির সদস্য অরূপ দাস বলেন, 'এনআরসির বিষয়টি আমরা এখানে তুলে ধরতে চাইছি।
‘ভারতের স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাস করা প্রান্তিক মানুষরা তাদের পরিচয় খুঁজছেন। এ পরিচয় খোঁজাটাকে আমরা এ বছর তুলে ধরছি।
‘নাগরিকত্ব প্রমাণের চাপ দিশেহারা করে তুলেছে সীমান্তবর্তী এলাকার নিজভূমে পরবাসী মানুষের জীবন।’