ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা বরাবরই সঠিক তথ্য ও আইনের শাসনের পক্ষে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন করে আসছেন। ক্ষমতার কাছে কখনো নতি স্বীকার বা আপস করেননি তিনি।
নিষ্ঠার সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অদম্য সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ এবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন রেসা।
শুক্রবার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার এক দিন আগে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেন ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম র্যাপলারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেসা।
সিএনএনের সাবেক ব্যুরোপ্রধান ও টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি হওয়া রেসা জানান, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতের্তেকে নিয়ে বেশ কয়েকটি সমালোচনাধর্মী প্রতিবেদন করে র্যাপলার। এতে ক্ষুব্ধ হন ক্ষমতাসীনরা। গত কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে ফিলিপাইন রাষ্ট্রের করা কয়েকটি মামলা লড়ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সাল থেকে ফিলিপাইন নিয়ে সংবাদ করছি আমি। আমি নিজে কখনো সংবাদ ছিলাম না। কিন্তু ক্ষমতার কথামতো কাজ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আমি নিজেই একপর্যায়ে সংবাদে পরিণত হই।’
রেসা বলেন, ‘আমি মনে করি, যেকোনো ধরনের গণতন্ত্রের জন্য আইনের শাসন জরুরি। নয়তো গণতন্ত্র আর গণতন্ত্র থাকে না, ফ্যাসিবাদে রূপ নেয়। কারণ যিনি ক্ষমতায় থাকেন, তিনিই সিদ্ধান্ত নেন, কার বাঁচার অধিকার আছে আর কার নেই।’
প্রেসিডেন্ট দুতের্তের শাসনে র্যাপলার ও তাকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তা সিএনএনকে জানান রেসা।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোসের আমলে এমনটা হয়নি।
‘গত দুই বছরের কম সময়ে আমার নামে ১০টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সাংবাদিকতার শুরু থেকে আমি যেভাবে সংবাদ করে আসছি, এখন তো তার থেকে ভিন্ন কিছু করছি না।’
আগামী বছরের মে মাসে ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে।
এ বিষয়ে রেসা বলেন, ‘গণতন্ত্র যাতে ঠিকমতো কাজ করতে পারে, এ জন্য সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা খুবই জরুরি।
‘নির্বাচন সুষ্ঠু কীভাবে হবে যদি সংবাদমাধ্যমগুলো অসত্য, বিদ্বেষমূলক সংবাদ প্রকাশ করে? আমাদের যুদ্ধ সঠিক তথ্যের পক্ষে, আমাদের যুদ্ধ সত্যের পক্ষে।’
রেসার সঙ্গে এবার শান্তিতে নোবেল পান রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ।