করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সংক্রমণের ভয়াল রূপ দেখেছে গোটা ভারতবাসী। চারপাশে মৃত্যুর হাহাকার আর প্রাণরক্ষাকারী অক্সিজেনের অভাবে শুধুই আতঙ্কের ছবি চোখে পড়েছিল। সেই সময় সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়েছিল চার লাখ। সেই দ্বিতীয় তরঙ্গ এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এবার আরও ভয়ংকর দিন আসতে চলেছে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে নীতি আয়োগ সদস্য ও স্বাস্থ্যসচিব ড. ভি কে পাল বলেন, ‘দৈনিক সংক্রমণ কোথায় পৌঁছবে তার কোনও সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তাই সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখে দৈনিক সংক্রমণ পৌঁছলে কী করা হবে, সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।’
ভি কে পাল জানিয়েছেন, ভারতে এখনও পর্যন্ত ৭১ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এ অবস্থায় দৈনিক সংক্রমণ কেমন হবে তা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশের অন্তত ২৮টি জেলায় এখনও করোনা সংক্রমণের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। এর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ ও অসমের বেশ কয়েকটি জেলা আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় সাপ্তাহিক করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের ওপরে।
পাশাপাশি বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল উৎসবের মৌসুমে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। মানুষকে দুর্গাপূজা ও রামলীলাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, তিনি বলেন, দিওয়ালিতে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে অনলাইনে দেখা করাই শ্রেয়।
লাভ আগরওয়াল আরও বলেন, যতটা সম্ভব জমায়েত এড়িয়ে চলুন। উৎসবের মৌসুমে মাস্ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যেক মানুষকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেন। যুগ্ম সচিবের মতে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভ্যাকসিন হলো একটা শিল্ড। তবে উৎসবের মৌসুম সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে। আর তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এমনকি দেশে দ্বিতীয় ঢেউ যে পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি, সে কথাও উল্লেখ করেছেন লাভ আগরওয়াল।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলেন তিনি।
এদিকে ফের করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ভারতে। সামনেই উৎসবের মৌসুম। এরই মধ্যে ফের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে সংক্রমণ। পরপর কিছুদিন আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে থাকার পর আবারও ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। গত ২৪ ঘণ্টায় এক ধাক্কায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।