বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মস্তিষ্কে ডিভাইস বসিয়ে বিষণ্নতা দূর

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:৫৩

৩৬ বছর বয়সী ওই রোগী টেলিকনফারেন্সে বলেন, ‘টানা পাঁচ বছর ভয়াবহ বিষণ্নতায় ভুগেছিলাম। কোনো ওষুধ বা ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপিতে কাজ হয়নি। প্রতিদিন আত্মহত্যার চিন্তা আমাকে যন্ত্রণা দিত। মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক ডিভাইস স্থাপন আমার জীবনে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।’

নিউরাল পেসমেকারের মতো কাজ করা ডিভাইস মস্তিষ্কে স্থাপনের মাধ্যমে এক রোগীর গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা দূর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা জানান, নিউরাল ইলেকট্রনিকসকে সূক্ষ্মভাবে নজরদারির মাধ্যমে মানসিক রোগের এই চিকিৎসায় ‘মাইলফলক সাফল্য’ মিলেছে।

এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী নেচার মেডিসিনে।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ক্রিস্টাল বলেন, ‘রোগীর মস্তিষ্কের সার্কিট শনাক্ত ও সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা সফলভাবে তার চিকিৎসা প্রতিরোধী বিষণ্নতা দূর করতে পেরেছি।’

মাথার খুলির নিচে স্থাপন করা যন্ত্রটি ইলেকট্রোড নিউরালের কর্মকাণ্ড শনাক্তের পর স্বল্প সময়ের জন্য সংশোধনমূলক বৈদ্যুতিক স্পন্দন মগজে পাঠায়

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ৩৬ বছর বয়সী ওই রোগী টেলিকনফারেন্সে বলেন, ‘টানা পাঁচ বছর ভয়াবহ বিষণ্নতায় ভুগেছিলাম। কোনো ওষুধ বা ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপিতে কাজ হয়নি।

‘প্রতিদিন আত্মহত্যার চিন্তা আমাকে যন্ত্রণা দিত। মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক ডিভাইস স্থাপন আমার জীবনে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মস্তিষ্কে স্থাপনের পরপরই যন্ত্রটি আমাকে এক ধরনের প্রশান্তি দেয়। এ প্রশান্তি এক বছর ছিল।

‘যুক্তিহীন চিন্তা করা নিউরালের কর্মকাণ্ড শনাক্তের পর যন্ত্রটির ইলেকট্রোড স্বল্প সময়ের জন্য সংশোধনমূলক বৈদ্যুতিক স্পন্দন মগজে পাঠায়। এর পরই বিষণ্নতা সৃষ্টির চক্রটি থেমে যায়।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃগীরোগ ও পারকিনসনের চিকিৎসায় ডিপ ব্রেইন স্টিমিউলেশন (ডিবিএস) সম্প্রতি বেশ প্রচলিত। তবে বিষণ্নতার চিকিৎসায় ডিবিএস খুব একটা সফল নয়। বিষণ্নতায় ভোগা রোগীদের ৩০ শতাংশ প্রচলিত চিকিৎসার সহায়তা নেন না।

মৃগীরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডিবিএস যন্ত্রে কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা। এরপর এটি ব্যবহার করা হয় বিষণ্নতার চিকিৎসায়।

অ্যামিগডালা নামে পরিচিত মস্তিষ্কের নিউরাল কর্মকাণ্ডের বিশেষ প্যাটার্নের বায়োমেকার শনাক্ত করে যন্ত্রটি। এরপর এটি মস্তিষ্কে সুখানুভূতি দেয়া ভেন্ট্রাল স্ট্রিটামকে ছোট বৈদ্যুতিক স্পন্দন পাঠায়। এতে তাৎক্ষণিকভাবে বিষণ্নতার লক্ষণ দূর হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বেইলর কলেজ অফ মেডিসিনের নিউরোসার্জন সামির শেঠ ওই গবেষণা দলে ছিলেন না, তবে বিষণ্নতা চিকিৎসায় তিনি আরেকটি পরীক্ষা করছেন।

সামির বলেন, ‘মনোরোগ চিকিৎসায় চলমান দুটি গবেষণা ইতিবাচক ফল দেবে বলে আমার ধারণা।’

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্যাথরিন স্ক্যানগস বলেন, ‘ভয়াবহ বিষণ্নতায় ভোগা আরও দুই রোগীকে আমাদের গবেষণার অংশ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ গবেষণায় ১২ রোগী অংশ নিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘বৈদ্যুতিক ডিভাইস ভিন্ন ভিন্ন রোগীর চিকিৎসায় কী ধরনের প্রভাব ফেলে, তা একবার নয়, কয়েকবার পরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে।

‘পাশাপাশি চিকিৎসা চলাকালীন কোনো রোগীর বায়োমেকার বা মস্তিষ্কের সার্কিটের পরিবর্তন হয় কি না, তাও দেখা জরুরি।’

এ বিভাগের আরো খবর