বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ভুয়া তথ্য ঠেকানোর চেয়ে মুনাফায় বেশি মনোযোগ ফেসবুকের’

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ২১:৪৫

ফ্রান্সেস হাউগেন বলেন, ‘আমরা এমন একটি তথ্যনির্ভর পরিবেশে আছি, যা ক্ষোভ, বিদ্বেষ এবং বিভেদের কন্টেন্ট দিয়ে ভর্তি। এটি আপনার নাগরিক বিশ্বাসকে ক্ষয় করতে থাকে, একে অন্যের ওপর আস্থা নষ্ট করতে থাকে। আমাদের একে অন্যের যত্ন নেয়ার ক্ষমতা কমাতে থাকে। ফেসবুকের যে সংস্করণটি এখন আছে সেটি আমাদের সমাজব্যবস্থাকে ছিঁড়ে ফেলছে। এটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জাতিগত সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে।’

বিদ্বেষমূলক ও ভুয়া তথ্য ঠেকানোর চেয়ে মুনাফাকেই বেশি গুরুত্ব দেয় ফেসবুক। এটি এই সময়ের সবচেয়ে বাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ফেসবুক গণতন্ত্রের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব অভিযোগ তুলেছেন ফেসবুকের সাবেক কর্মকর্তা ফ্রান্সেস হাউগেন।

সিক্সটি মিনিটস নামের অনুষ্ঠানে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারের তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি তথ্যনির্ভর পরিবেশে আছি, যা ক্ষোভ, বিদ্বেষ এবং বিভেদের কন্টেন্ট দিয়ে ভর্তি। এটি আপনার নাগরিক বিশ্বাসকে ক্ষয় করতে থাকে, একে অন্যের ওপর আস্থা নষ্ট করতে থাকে। আমাদের একে অন্যের যত্ন নেয়ার ক্ষমতা কমাতে থাকে। ফেসবুকের যে সংস্করণটি এখন আছে সেটি আমাদের সমাজব্যবস্থাকে ছিঁড়ে ফেলছে। এটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জাতিগত সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে।’

এ বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ‘ফেসবুক ফাইলস’ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ফাঁস হওয়া বিভিন্ন নথি প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে আসছিল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। এই নথিগুলো কে সংগ্রহ করেছিলেন সেটি অজানা ছিল।

সিক্সটি মিনিটসের সাক্ষাৎকারে মাধ্যমেই ফেসবুকের নথি ফাঁসকারী হিসেবে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন ফ্রান্সেস হাউগেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন চলার সময় ভুয়া তথ্যের প্রচার ঠেকাতে সাময়িকভাবে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু রেখেছিল ফেসবুক।

হাউগেন বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই তারা সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল অথবা সেটিংস পাল্টে আগের অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। এটি সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা মনে হয়েছে।’

হাউগেনের অভিযোগ মুনাফার জন্য নেতিবাচক উদ্দেশ্যে অ্যালগরিদম ঠিক করে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের নিয়ে যে ইতিবাচক প্রচার চালায় তার সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ফেসবুক জানে, সবচেয়ে বেশি ট্রাফিক পাওয়া যায় বিদ্বেষমূলক কন্টেন্টে। এমন কন্টেন্টের ওপরেই ফেসবুকের বড় অংশের আয় নির্ভর করে।

তিনি বলেন, ‘আপনার হাতে যখন এমন ব্যবস্থা থাকবে যা রাগ দিয়ে হ্যাক করা যায়, আর প্রকাশকরা যখন ভাবে যে, ওহ আমি যদি আরও বেশি আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষমূলক কন্টেন্ট দিই তাহলে বেশি টাকা কামাবো; তখন পুরো বিষয়টি ফেসবুকের জন্যেও লাভজনক এবং প্রকাশকদের জন্যেও লাভজনক। ফেসবুক এমন একটা প্রণোদনা ব্যবস্থা তৈরি করেছে যা মানুষকে পরস্পরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।’

সাক্ষাৎকারে হাউগেন বলেন, ‘ফেসবুকে আমি যেটা বারবার দেখেছি সেটা হলো, জনসাধারণের জন্য কোনটা ভালো আর ফেসবুকের জন্য কোনটা ভালো, এর মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। আর ফেসবুক প্রতিবারই আরও বেশি মুনাফা অর্জনের মতো নিজের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে।’

হাউগেনের এই সাক্ষাৎকারের পর সোমবার রাতে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ। সার্ভারে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হওয়ার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর মঙ্গলবার ভোর থেকে চালু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।

এসময় অনেকেই এ ঘটনার সঙ্গে হাউগেনের সাক্ষাৎকারের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেন। তবে একে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

এ বিভাগের আরো খবর