বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কল্লোলের ফ্যাশন ডিজাইনে স্টাইলিশ হিজাব

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ১৫:৪৯

ভারতে কল্লোলকে ‘উসকানিদাতা’, ‘প্রতিবন্ধী শিশু‘ থেকে শুরু করে ফ্যাশনের ‘বিদ্রোহী’ ও ‘লেডি গাগা’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। তবে এসবে পাত্তা দেন না কল্লোল। নিজেকে ‘ডিজাইনারের’ চেয়ে ‘পোশাক প্রস্তুতকারী’ হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

ভারতীয় ডিজাইনার কল্লোল দত্ত তার ফ্যাশনভাবনায় যোগ করেছেন অনন্য বৈচিত্র্য। ভারতে হিজাব বা বোরকা ঘিরে বিদ্বেষমূলক দৃষ্টিভঙ্গি চ্যালেঞ্জ করে এটিকেই কাজের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে তিনি। কল্লোলের ডিজাইন করা পোশাকে রয়েছে ঢেউয়ের খেলা, স্তরে স্তরে ভাঁজে অনুসৃত হয়েছে হিজাবের বৈশিষ্ট্য।

মধ্যপ্রাচ্যে বড় হওয়া কল্লোল মনে করেন, ধর্মীয় কারণেই একমাত্র পর্দা করা হয় এমনটি ভাবার কারণ নেই। কারণ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর সময়কালের আগেও আরবে পর্দাপ্রথা ছিল।

২০১৯ সালে ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘কারা বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগাচ্ছে, তা তাদের পোশাক দেখে চিহ্নিত করা হবে।’

দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি মোদির ওই উক্তিতে পরিষ্কার, পোশাক শুধু পোশাকই নয়, এটি রাজনীতিরও অংশ।

এ বিষয়ে কল্লোল দত্ত ভাইসকে বলেন, ‘ক্ষমতার শীর্ষে বসা ব্যক্তিরা বিশেষ কোনো সম্প্রদায়কে যখন তাদের পোশাক দিয়ে মূল্যায়ন করেন, তখন ফ্যাশন রাজনৈতিক হয়ে যায়।’

দীর্ঘদিন ধরে ভারতে কল্লোলকে ‘উসকানিদাতা’, ‘প্রতিবন্ধী শিশু‘ থেকে শুরু করে ভারতীয় ফ্যাশনের ‘বিদ্রোহী’ ও ‘লেডি গাগা’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

তবে এসবে পাত্তা দেন না কল্লোল। নিজেকে ‘ডিজাইনারের’ চেয়ে ‘পোশাক প্রস্তুতকারী’ হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

আন্তর্জাতিক জামিল পুরস্কারের জন্য কল্লোলকে সম্প্রতি সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ইসলামি ঐতিহ্যের অনুপ্রেরণায় তৈরি করা সমসাময়িক আর্ট ও ডিজাইনের জন্য এ পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে।

লন্ডনের ভিক্টোরিয়া ও অ্যালবার্ট জাদুঘরে চলছে কল্লোলের ডিজাইন করা পোশাকের প্রদর্শন, সেখানে পুরুষ এক মডেলকেও হিজাব পরতে দেখা গেছে।

তবে ভারতের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত ফ্যাশন শোর বিষয়ে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। কল্লোল বলেন, ‘আমি সাধারণত ইসলামি ঘরানার পোশাক বেশি পরি। বন্ধুরা সতর্ক করে বলে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আমাকে একবার নয়, দুবার পরীক্ষা করবে। আসলেই তা হয়।’

কল্লোল মনে করছেন, ভারতে পোশাক ডিজাইনে ‘জাতীয়তাবাদ’ ভয়ানক ও উদ্বেগজনক।

তিনি বলেন, ‘প্রায় দুই হাজার বছর আগে মধ্য অ্যাসিরীয় সাম্রাজ্যেও পর্দাপ্রথা ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

‘অ্যাসিরীয় আইনের ৪০ অনুচ্ছেদে কে পর্দা করবে আর কে করবে না, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবাহিত নারী, বিধবা ও অ্যাসিরীয় নারীরা রাস্তায় বের হলে তাদের মাথা অবশ্যই অনাবৃত রাখা যাবে না বলে ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে।’

পর্দাপ্রথার সঙ্গে একমাত্র ইসলামকে যুক্ত করার মানসিকতাকে তাই ‘অজ্ঞতা’ হিসেবে দেখেন কল্লোল।

তিনি বলেন, ‘অনেক ভারতীয়ই জানেন না, ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসরত নিম্নবর্ণ ও অস্পৃশ্য হিন্দু নারীরা প্রকাশ্যে বুক ঢাকতে চাইলে তাদের স্তন-কর দিতে হতো।

‘এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও কোরিয়া ও জাপানে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে পর্দাপ্রথার চল রয়েছে।

‘মুসলিম নারীরাও বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক পরেন। তাদের সবার পোশাক এক নয়, এতে বৈচিত্র্য রয়েছে।‘

এ বিভাগের আরো খবর