করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পূজার সময় ভিড় ও জমায়েত এড়াতে চান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মণ্ডপে না গিয়ে তিনি দুর্গাপূজার ভার্চুয়াল উদ্বোধনে জোর দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন থেকে যেন ভার্চুয়ালি পূজা উদ্বোধন করা যায়, সে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পূজায় নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নবান্নের সভাঘর।
নবান্ন সূত্র জানায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা যেন পূজার উদ্বোধন করেন, সে রকম দুই হাজারের বেশি আমন্ত্রণপত্র এসেছে। এসব বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।
কর্মকর্তারা জানান, করোনার বিধিনিষেধের কারণে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে সব মণ্ডপে সশরীরে হাজির থাকা সম্ভব নয়। আর মুখ্যমন্ত্রী নিজেও অযথা ভিড় বাড়াতে চাইছেন না। তাই জেলার পাশাপাশি কলকাতার বেশ কিছু পূজা উদ্বোধন ভার্চুয়ালি করবেন তিনি।
দুর্গাপূজার এ বিশেষ আয়োজনে নতুন করে সাজানো হচ্ছে নবান্নের সভাঘর। সেখানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরকে। মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল পূজা উদ্বোধন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সম্ভাবনা রয়েছে। সে কথা ভেবে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে এসব কাজ করানো হচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ মেনেই সামগ্রিক পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পূজার আবহ ফুটিয়ে তুলতে নবান্নের সভাঘরে ঢাক নিয়ে হাজির থাকবেন ঢাকিরা। থাকছে ধুনুচি নাচের ব্যবস্থা। উদ্বোধন মঞ্চের চারদিকে দেখা যাবে জ্বলন্ত প্রদীপ। রাখা থাকবে মঙ্গলঘট, চাঁদমালা ও আম্রপত্র শঙ্খ। কাঁসর দিয়ে সাজানো হবে পুরো মঞ্চ। সেখানে আলো ছড়াবেন থালি গার্ল। থাকবে কলা বউ। নীল আকাশ, কাশফুল আর শিউলির মাধ্যমে শারদ উৎসবের আমেজটাই তুলে আনা হবে নবান্নের মঞ্চে।এ মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রিমোটে ভার্চুয়ালি দুর্গাপূজা উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
ভার্চুয়াল পূজা উদ্বোধন প্রসঙ্গে ত্রিধারা সম্মিলনী কর্মকর্তা রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশীষ কুমার বলেন, ‘আমরা এখনো চূড়ান্ত কিছু জানি না। তবে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে আমাদের যেমনটা জানানো হবে, আমরা সেই মতো পদক্ষেপ নেব।’
শিবমন্দির পূজা কমিটির পার্থ ঘোষ বলেন, ‘দূরের পূজা উদ্বোধন ভার্চুয়াল হলেও কাছের মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রী গেলেন, এমনটাও হতে পারে। আমরা আশাবাদী, উনি একবার আমাদের মণ্ডপ ঘুরে যাবেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর জানায়, কোথায় ভার্চুয়ালি আর কোথায় সশরীরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পূজা উদ্বোধন করবেন, সে তালিকা এখনো ঠিক হয়নি। সেটা হলে নবান্ন থেকে ফোনে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় নাইট কারফিউতে ছাড় থাকলেও গত বছরের মতো এবারও পশ্চিমবঙ্গের পূজামণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
সে কারণে দুর্গাপূজা থেকে কালীপূজার কোনো মণ্ডপে প্রবেশ করে এবারও প্রতিমা দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন দর্শনার্থীরা। তবে ভার্চুয়াল প্রতিমা দর্শনের ওপর বেশি জোর দিতে বলেছে আদালত।
রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানিয়েছে, ‘এই রায়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই।’