নেদারল্যান্ডসের হয়ে কাজ করা আফগান দোভাষীদের আদালতে ডেকে পাঠিয়েছে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান।
আদালতে হাজির না হলে ওই সব দোভাষীর পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল এনওএসের স্থানীয় সময় শুক্রবারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এনওএসের প্রতিবেদনের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আদালতে হাজির হতে বলা আফগান দোভাষীরা তালেবানের প্রতিশোধের ভয়ে পলাতক।
প্রতিবেদন সম্প্রচারের সময় এনওএস তালেবানের একটি চিঠি দেখায়।
এতে বলা হয়েছে, ‘আদালতে দোভাষীরা উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে তাদের পরিবারের সদস্যরা এর জন্য দায়ী থাকবে।
‘দোভাষীদের পরিবারের সদস্যদের ভয়াবহ শাস্তি দেয়ার মধ্য দিয়ে অন্য বিশ্বাসঘাতকদের উচিত শিক্ষা দেয়া হবে।’
এনওএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবানের হুমকিমূলক চিঠির প্রাপক আফগানিস্তানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন প্রয়োগকারী সহযোগিতা সংস্থা ইউরোপোলে কাজ করতেন।
আফগান ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছ থেকে ‘অসম্মানজনক ও বেআইনি অর্থ’ নেয়ার অভিযোগ আনে তালেবান।
তালেবানের নতুন শাসনের আগে নেদারল্যান্ডসের হয়ে কাজ করা আরেক আফগান দোভাষীকেও চিঠি পাঠিয়েছে তালেবান।
এতে বলা হয়, ‘আমরা (তালেবান) প্রতিশোধ নেব। আপনাকে (ওই দোভাষী) না পেলে আপনার নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে বিষয়টি ফয়সালা করা হবে।’
তালেবানের কয়েকজন যোদ্ধার মৃত্যুর পেছনে ওই দোভাষীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ গোষ্ঠীটির।
এনওএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি সিলমোহর থাকা প্রতিটি চিঠি তালেবানের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে কাজ করা প্রায় ১০ আফগান দোভাষী বা অন্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে এনওএসের।
ওই ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাদের পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে।
চলতি বছরের জুনে বিদেশি বাহিনীর হয়ে কাজ করা সব আফগান দোভাষীকে অনুতপ্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল তালেবান।
একই সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সব সেনা প্রত্যাহারের পর দোভাষীদের আফগানিস্তান না ছাড়ারও আহ্বান জানায় গোষ্ঠীটি। তাদের কোনো ক্ষতি করা হবে না বলে আশ্বস্তও করা হয়।
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান দখলের পরপরই আফগান সরকারি, সেনাবাহিনী কর্মকর্তাসহ সব প্রতিপক্ষকে সাধারণ ক্ষমা করার অঙ্গীকার করেছিল তালেবান।
তবে জাতিসংঘের গোপন এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি বাহিনী বা সংস্থার হয়ে কাজ করা আফগানদের খুঁজছে তালেবান।