করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই বিতর্ক চলছে ভারত ও যুক্তরাজ্যের। ভারতের আপত্তি থাকলেও দেশটির টিকার অনুমোদন দেয়নি যুক্তরাজ্য। এমনকি দুই ডোজ টিকা দেয়ার পরেও ভারতীয়দের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় অসন্তুষ্ট নয়াদিল্লি এবার প্রতিশোধের পথে হাঁটল।
এবার যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বিধিনিষেধ জারি করেছে দেশটি। তাদের জন্য করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট এবং বাধ্যতামূলক দশ দিনের কোয়ারেন্টিনের নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে আসা যাত্রীর যে টিকাই নেয়া থাকুক, তাকে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। আর বাধ্যতামূলকভাবে থাকতে হবে দশ দিনের কোয়ারেন্টিনে।
সোমবার থেকে চালু হচ্ছে এই নিয়ম। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভারতে আসার আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা বা আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। ভারতে আসার আট দিনের মাথায় আবার করাতে হবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা। ওই রিপোর্ট নেগেটিভ এলে দশ দিন পর বাইরে যেতে পারবেন তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে কোভিশিল্ডকে সুরক্ষিত বলে জানানো হলেও যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশ টিকাটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। এ কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া শিক্ষার্থী ও প্রবাসীদের।
যুক্তরাজ্য কোয়ারেন্টিনের নিয়ম করার পরই বিতর্ক শুরু হয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি নিয়ে ভারতের আপত্তির কথা জানান যুক্তরাজ্যকে। যুক্তরাজ্যের নতুন পররাষ্ট্র সচিব লিজ ট্রুসকে বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লির অসন্তোষের কথা বলেন।
যুক্তরাজ্য পাল্টা জানায়, টিকা নয় বরং টিকা দেয়ার সার্টিফিকেট নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাদের। পরে বিষয়টি নিয়ে সরব হন পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কোভিশিল্ডকে বৈধ করোনা টিকা হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ায় আমাদের দেশ থেকে সে দেশে যাওয়া যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। যুক্তরাজ্য দ্রুত সিদ্ধান্ত বদল না করলে ভারতের পক্ষ থেকেও একই আচরণ করা হবে।’
ভারত বার্তা দেয়ার ঠিক পরই যুক্তরাজ্য নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ‘আপাতত চারটি টিকাকে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাক্সজেভ্রিয়া, মডার্না, ফাইজ়ার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডকে অনুমোদিত টিকা হিসাবে গণ্য করা হবে।’
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনের জানিয়েছে, টিকা সার্টিফিকেটে কিছু সমস্যা রয়েছে। এটি নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। আপাতত ভারতীয় যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এরপরই ভারতের এই নয়া সিদ্ধান্ত বদল বলে মনে করছেন অনেকে।