দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের একটি কারাগারে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি পক্ষের মধ্যে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১১৬ জনে। আহত হয়েছে ৮০ জন।
এ ঘটনায় দেশের সব কারাগারে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দরনগরী গুয়াইয়াকুইল শহরে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বিপজ্জনক বিবেচিত লিটোরাল কারাগারে হয় এ দাঙ্গা। দেশটির ইতিহাসে কারাগারে সহিংসতায় এত বিপুলসংখ্যক হতাহতের ঘটনা এটাই প্রথম।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, লিটোরাল কারাগারে যেসব অপরাধী চক্রের সদস্যরা বন্দি, তাদের সঙ্গে মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক কারবারিদের যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোররাতের এ সহিংসতায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের প্রাণহানির খবর প্রকাশ হয়। বুধবার দিন না পেরোতেই নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়।
কমপক্ষে পাঁচ কয়েদির শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। বাকিদের হত্যা করা হয়েছে গুলি করে। পুলিশ কমান্ডার ফাউস্তো বুয়েনানো জানান, কয়েদিরা গ্রেনেডও ছুড়েছে।
প্রায় ৪০০ পুলিশ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কারাগারের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সহিংসতার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে মাদক চোরাচালানে জড়িত প্রভাবশালী মেক্সিকান একটি চক্র। চক্রটি বর্তমানে ইকুয়েডরেও সক্রিয়।
ইকুয়েডরের কারাবিষয়ক পরিচালক বলিভার গারজন স্থানীয় একটি বেতারে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। কারাগারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছি আমরা। কিন্তু তার আগে গোলাগুলি, বিস্ফোরণে নারকীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।
‘যেখানে সংঘাতের সূত্রপাত, সেখানে প্রবেশ করতে শুরু করেছে পুলিশ। তখন থেকে আরও অনেক মরদেহের সন্ধান মিলছে।’
তিনি জানান, কারাগারের একটি অংশের বন্দিরা দেয়ালের একটি ফুটো থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রগুলোর ওপর হামলা চালাতে শুরু করে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও একটি কারাগারে দাঙ্গায় নিহত হয় ৭৯ জন কয়েদি।