সাতসকালে ঠান্ডা পানিতে অনেকে গোসল করতে চান না। আবার অনেকে অভ্যাসবশত এ কাজটি করেন।
তারা হয়তো জানেন না, ঠান্ডা পানিতে গোসল মানসিক প্রশান্তি দেয়ার পাশাপাশি শারীরিক উপকারও হয়।
সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সায়েন্স এলার্ট।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তি ও জেলখানার কয়েদিদের ‘উত্তপ্ত ও অস্থির মস্তিষ্ক শীতল ও বেপরোয়া ইচ্ছাকে’ বাগে আনার লক্ষ্যে প্রথম ঠান্ডা পানিতে গোসল করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে ঠান্ডা পানিতে গোসলের প্রভাব নিয়ে বড় আকারে গবেষণা চালানো হয়।
গবেষণায় জানা যায়, উষ্ণ পানিতে গোসল করা ব্যক্তিদের চেয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা ব্যক্তিরা কম অসুস্থতায় ভোগেন। এতে তাদের কাজে উপস্থিতির হারও বেশি থাকে।
গবেষণার অংশ হিসেবে তিন হাজারের বেশি মানুষকে চারটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলকে প্রতিদিন উষ্ণ পানিতে গোসল করতে বলা হয়।
দ্বিতীয় দলকে ৩০ সেকেন্ড, পরের দলকে ৬০ সেকেন্ড ও শেষ দলকে ৯০ সেকেন্ড ঠান্ডা পানিতে গোসল করার কথা বলেন গবেষকরা।
সবাইকে এক মাস এ রুটিন মানতে বলা হয়।
তিন মাসের ফলোআপ শেষে গবেষকরা দেখেন, ঠান্ডা পানিতে গোসল করা তিনটি দলের সবাই ২৯ শতাংশ কম অফিসে অসুস্থতাজনিত ছুটি নেন।
ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে অসুস্থ কম হওয়ার প্রকৃত কারণ সুস্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের ভাষ্য, এর মাধ্যমে দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে পারে।
চেক রিপাবলিকে করা আগের এক গবেষণায় জানা যায়, দেড় মাস ধরে সপ্তাহে তিনবার ঠান্ডা পানিতে গোসল করেন তরুণ কয়েকজন ক্রিয়াবিদ। ওই সময় তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতার কিছুটা উন্নতি হয়।
তবে গবেষণায় উঠে আসা ওই তথ্য নিশ্চিতে আরও বড় ধরনের অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষকদের ধারণা, ঠান্ডা পানি মানবদেহে স্নায়ুতন্ত্র আরও সক্রিয় করে। গোসলের সময় নোরেপিনেফ্রিন হরমোনের বৃদ্ধি ঘটে। এটি হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রম ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
এ ছাড়া ঠান্ডা পানি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। শরীরে ঠান্ডা পানি লাগলে চামড়ায় রক্ত চলাচল কমে যায়। গোসল শেষ হলে দেহ আপনাআপনি উষ্ণ হয়। এতে চামড়ার উপরিভাগে রক্ত চলাচলের বৃদ্ধি ঘটে।
এ ছাড়া ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে দেহের ওজন কমে যেতে পারে বলেও ধারণা বিশেষজ্ঞদের।