করোনাভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম উপসর্গ হলো ব্যক্তির স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি লোপ পাওয়া। করোনামুক্তির পর সময়ের সঙ্গে বেশিরভাগ মানুষ স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি ফিরে পেলেও আছে কিছু ব্যতিক্রমও। তাদের ঘ্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনতে ভিটামিন ‘এ’র কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছেন গবেষকরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘ্রাণশক্তি হারানো কিংবা দুর্বল ঘ্রাণশক্তির চিকিৎসায় একটি ভিটামিন ‘এ’ নেজাল ড্রপের পরীক্ষা চালাচ্ছেন একদল ব্রিটিশ গবেষক।
১২ সপ্তাহের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অ্যাংলিয়া।
পরীক্ষায় অংশ নেয়া স্বেচ্ছাসেবকদের কয়েকজনকে এ চিকিৎসা দেয়া হবে। কিন্তু পচা ডিম বা গোলাপের মতো উচ্চ গন্ধযুক্ত দ্রব্য শুঁকতে দেয়া হবে স্বেচ্ছাসেবকদের সবাইকে।
এরপর তাদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হবে। স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে দেখা হবে যে ভিটামিন প্রয়োগের ফলে ‘ঘ্রাণশক্তি সংশ্লিষ্ট স্নায়ু’র ক্ষত সেরেছে কি না বা প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে কি না।
করোনার খুব সাধারণ উপসর্গগুলোর একটি ঘ্রাণশক্তি হারানো বা দুর্বল হয়ে যাওয়া। তবে ফ্লুধর্মী আরও অনেক ভাইরাসের কারণেও এমন উপসর্গ তৈরি হতে পারে।
করোনামুক্তির কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বেশিরভাগ মানুষ হারানো ঘ্রাণশক্তি ফিরে পান। কিন্তু অনেকের মধ্যেই উপসর্গটি দীর্ঘ সময় থেকে যাওয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের নরউইক মেডিক্যাল স্কুল ও জেমস প্যাগেট ইউনিভার্সিটি হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্টের প্রধান গবেষক অধ্যাপক কার্ল ফিলপট। তিনি বলেন, “ভিটামিন ‘এ’ নেজাল ড্রপ ব্যবহারে রোগীদের মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর আকৃতি ও কার্যকারিতা পরিবর্তন আসছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাই আমরা।
“নাকের ওপরের অংশে, যেখানে ঘ্রাণশক্তি স্নায়ুগুলো একসঙ্গে যুক্ত থাকে এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে, ওই অংশের আকৃতিতে পরিবর্তন খুঁজব।
“এ ছাড়া মস্তিষ্কের যেসব অংশ ঘ্রাণ শনাক্ত করে, সে অংশগুলোর সক্রিয়তাও লক্ষ্য করা হবে।”
ভিটামিন ‘এ’ বা রেটিনল দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্ষম রাখতে সাহায্য করে, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, ত্বকে ভাঁজ পড়া ঠেকাতে সাহায্য করে।
দুগ্ধজাত পণ্য ও কিছু সবজিতে চর্বিতে দ্রবণযোগ্য ভিটামিনটি পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেকে সম্পূরকভাবেও ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করেন, যা মাত্রাতিরিক্ত হলে ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।