এশিয়ার মানুষ উত্তর আমেরিকায় কবে নাগাদ পৌঁছেছিল, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে।
মহাদেশটিতে পাওয়া পাথরের বিভিন্ন উপাদান দেখে ১৬ হাজার বছরেরও আগে মানুষ সেখানে যায় বলে একদল গবেষক দাবি করে আসছেন।
তবে এ নিয়ে বরাবরই সন্দেহ পোষণ করে আসছেন বেশ কয়েকজন গবেষক।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এক আবিষ্কার আগের গবেষকদের দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৩ হাজার ও ২১ হাজার বছরের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে মানুষের বেশ কয়েকটি পায়ের ছাপ আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী।
তাদের ধারণা, কমপক্ষে সাত হাজার বছর আগে উত্তর আমেরিকায় মানুষ বসতি গড়ে। এমনটা হলে মহাদেশটিতে কবে বসতি স্থাপন হয়, সে সম্পর্কে প্রচলিত মত পাল্টে যাবে।
গবেষকদলের ধারণা, অন্য মহাদেশ থেকে ওই সময় উত্তর আমেরিকায় ব্যাপক হারে মানুষজন আসে, যেটি সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি।
এসব মানুষ সম্ভবত বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলেও ধারণা গবেষকদের।
নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস এলাকার নরম কাদামাটিতে মানুষের পায়ের ছাপগুলো পাওয়া যায়।
পায়ের ছাপের মাপ দেখে গবেষকরা মনে করছেন, সেগুলো কিশোর ও কম বয়সি শিশুদের পায়ের ছাপ। তাদের পায়ের ছাপের পাশাপাশি কখনও কখনও প্রাপ্তবয়স্কদেরও পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে।
এ ছাপগুলো দেখে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আদি বাসিন্দাদের জীবন কেমন ছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।
কিশোররা সে সময় অনাবিষ্কৃত মহাদেশটিতে কী করছিল, তা নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে বয়স্কদের শিকারে তারা সহযোগিতা করতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকদলের সদস্য ও যুক্তরাজ্যের বোর্নমাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. স্যালি রেনল্ডস বলেন, ‘সে সময় খুব অল্প সময়ের ভেতর শিকার করা জন্তুদের খাবার উপযোগী করা হতো।
‘এ জন্য আগুন জ্বালানো হতো। জন্তুদের চর্বি গলানো হতো। এসব কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠ, পানিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র সম্ভবত শিশু-কিশোররাই সরবরাহ করত।’
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষকদলের আরেক সদস্য ম্যাথিউ বেনেট বলেন, ‘উত্তর আমেরিকায় মানুষের বসতি স্থাপনা ঘিরে নানা বিতর্ক থাকার বড় কারণ- এ বিষয়ে পরিষ্কার ডাটা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’