ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার নতুন প্রতীক ‘চামচ’ হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে একটি জেল পালানোর ঘটনা। গত ৬ সেপ্টেম্বর মরিচা ধরা চামচ দিয়েই সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ইসরায়েলের সুরক্ষিত কারাগার থেকে পালিয়েছেন ছয় ফিলিস্তিনি। যদিও বড় ধরনের তল্লাশি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত দুই বন্দিকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
এএফপির বরাতে ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, সুড়ঙ্গ দিয়ে বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ওই ঘটনাটি ঘটেছিল ইসরায়েলের জিলবোয়া কারাগারে। পালানোর আগে কয়েক মাসের নিরলস প্রচেষ্টায় সুড়ঙ্গটি খুঁড়েছিলেন বন্দিরা। কারাগারের দেয়ালের ঠিক পাশেই ছিল বড় রাস্তা। বন্দিরা যে কক্ষে অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে সুড়ঙ্গটির অপর মাথা সেই রাস্তায় গিয়ে শেষ হয়।
পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সশস্ত্র আল-আকসা মারটায়ার্স ব্রিগেডের সাবেক এক নেতা ছাড়াও ছিলেন ইসলামিক জিহাদের পাঁচ সদস্য।
ইসরায়েল এই ঘটনাটিকে ‘বড় ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ বললেও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এ ঘটনাকে ‘বীরত্বপূর্ণ’ বলে আখ্যা দেন। বন্দিদের সবাই ইসরায়েলিদের ওপর হামলার দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন।
ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট মোহাম্মেদ সাবানেহ বন্দি পালানোর ঘটনাটি নিয়ে বেশ কয়েকটি কার্টুনও এঁকেছেন। একটি কার্টুনচিত্রে চামচ দিয়ে খোঁড়া সুড়ঙ্গটিকে ‘মুক্তির সুড়ঙ্গ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের বাইরে কুয়েতের ভাস্কর মাইথাম আব্দেল একটি ভাস্কর্যও নির্মাণ করেছেন। সেই ভাস্কর্যে দেখা যায়, একটি বিশাল হাত একটি চামচ ধরে আছে।
আরেকটি ব্যাপার হলো, সাম্প্রতিক পালানোর ঘটনাটি অনেক পুরোনো আরেকটি জেল পালানোর ঘটনাকেও সামনে টেনে এনেছে। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরের ঘাসেন মাহদাওয়ি ছিলেন সেই জেল পালানোর নায়ক। ১৯৯৬ সালে আরেক বন্দিকে সঙ্গে নিয়ে তিনিও একটি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে পালিয়েছিলেন। আর সেই সুড়ঙ্গটি তিনি খুঁড়েছিলেন শুধু হাতের নখ দিয়ে!