যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের জোট ‘কোয়াড’-এর বৈঠকে চীনের আগ্রাসী নীতি ও আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করবেন চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
২৪ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে মুখোমুখি আলোচনায় বসবেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবার দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ।
ওই দিনই মুখোমুখি হবেন মোদি ও বাইডেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্ৰণালয় ও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠক হওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসেই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি।
কোয়াড অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এর আগে একটি ভার্চু্য়াল বৈঠক হয়েছিল। ১২ মার্চ ওই বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি।
চীনের প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে এই চার দেশ কীভাবে একজোট হয়ে কাজ করবে, সেই নিয়েই আলোচনা হয়। এ ছাড়া করোনা টিকা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও কথা হয়েছিল তাদের।জো বাইডেনের ইন্দো-প্যাসিফিক কো-অর্ডিনেটর কুর্ত ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, বৈঠকে টিকা কূটনীতি ও পরিকাঠামোসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। চীন যেভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে আগ্রাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে, তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পরিকাঠামোসংক্রান্ত পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাইডেন।
বিশেষ করে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ করতে ওই পরিকল্পনা জোরদার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। এর আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকেও এই সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছিলেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজোট হয়ে কাজ করার বার্তাও মূলত দেয়া হবে এই বৈঠকে। করোনা মহামারির মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করবে।নিউ ইয়র্কে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৬তম অধিবেশনের শীর্ষস্তরের সাধারণ বিতর্কে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবারের সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘করোনা মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা, মজবুতভাবে পুনর্গঠন করা, সমাজের চাহিদার প্রতি সাড়া দেয়া, মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং জাতিসংঘকে পুনরুজ্জীবিত করা’।এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের হয়েই স্লোগান তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বাইডেন। বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর মোদির সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি তার।
এর আগে তিনবার ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ হয় দুজনের। মার্চে কোয়াড সম্মেলন, এপ্রিলে জলবায়ু পরিবর্তন এবং জুনে জি-৭ গোষ্ঠীর বৈঠকে। এবার প্রথম সশরীরে সাক্ষাৎ হবে তাদের।
অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আফগানিস্তান ইস্যুও একটা বড় জায়গা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান নিয়ে অবস্থান প্রসঙ্গে সমালোচিত হয়েছেন বাইডেন। অন্যদিকে, তালেবানি শাসন চিন্তা বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লিরও।
এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মতে, আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করেছে আমেরিকা। এবার তাই পুরো নজরটাই দেয়া হবে চীনের দিকে।