উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে রোববার একটি সর্বভারতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। পুরো পাতাজুড়ে সেই বিজ্ঞাপনে দেখা যায়- আদিত্যনাথের বড় একটি আপাদমস্তক ছবি।
বিজ্ঞাপনটিতে যোগীর পায়ের কাছেই উন্নয়নের কয়েকটি ছবিও দেয়া হয়। এই ছবিতেই বেধেছে গণ্ডগোল। কারণ ছবিতে যে উড়ালসেতু দেখা যাচ্ছে তা উত্তরপ্রদেশের নয়, কলকাতার। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস চড়াও হয়েছে বিজেপির ওপর।
পরে অবশ্য বিজেপির তরফে এটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ভুল বলে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনটি ছাপা হয়েছে, তারাও ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে।
কিন্তু সেই সেতু নিয়ে এখন তৃণমূলের সঙ্গে বচসা চলছে পশ্চিমবঙ্গের একসময়ের ক্ষমতাসীন দল সিপিএমের। সিপিএমের দাবি, সেতুটি আসলে বাম আমলে তৈরি পরমা উড়ালসেতু।
এর আগে যোগীর বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে এটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার উন্নয়নে বিজেপির স্বীকৃতি বলে দাবি করেন তৃণমূলের ছোট-বড় সব নেতা।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন করার অর্থ এই নয়- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার উন্নয়নের ছবি যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করবেন। এখন মনে হচ্ছে, বিজেপির গড় হিসেবে খ্যাত রাজ্যেই উন্নয়নের ডবল ইঞ্জিন মডেল চূড়ান্ত ব্যর্থ।’
পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম টুইট করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার উন্নয়নের ছবি ব্যবহার করে ফেলাটা এজেন্সির ভুল নয়। বরং উত্তরপ্রদেশের আসল চিত্র প্রকাশ্যে চলে এলো।’
তৃণমূল-বিজেপির এই উন্নয়ন বিতর্কের মাঝে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ফেসবুকে একটি ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করেন। সেখানে লেখা, ‘মিথ্যার কি অপার মহিমা।’
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী টুইট করে বলেন, ‘যোগী আদিত্যনাথের ইউপি সরকারের বিজ্ঞাপনে কলকাতার ফ্লাইওভার ও লাগোয়া হোটেলগুলো দেখানো হয়েছে, সবই বাম আমলের প্রস্তাব, প্রকল্প এবং সম্পূর্ণকরণ। মাননীয়ার আমলে পরমা থেকে মা নামকরণ এবং নীল সাদা রং করে চালু করা। বিজেপির মতোই মাননীয়া বাহিনী খুশিতে ডগমগ। নকলের প্রতিযোগিতা যে।’
সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যোগী আদিত্যনাথ দুজনেই স্বীকার করলেন, বাংলার উন্নয়ন প্রকৃত অর্থে বাম আমলে হয়েছিল। যে উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে, যার ছবি দেখানো হয়েছে, সব পরিকল্পনা বামেরা করে গেছে। যতটুকু প্রদর্শন করা হচ্ছে, তা বাম আমলের। বরং উড়ালপুল রক্ষণাবেক্ষণ না করায় ভেঙে পড়েছে। সেই কৃতিত্ব আছে ওদের।’
বামেদের দাবির পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র সমীর চক্রবর্তী বলেন, ‘ওরা সবই পরিকল্পনা করে গেছে। আগে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ছিল। সিপিএমের ৩৪ বছরের পরিকল্পনার কেউ রূপ দেখেনি। সব পরিকল্পনার শেষ টান দিতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৩৪ বছরে সিপিএম একটা ব্রিজ তৈরি করতে পারেনি।’