করোনাভাইরাসের চতুর্থ ধাক্কার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান।
পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, শুক্রবার পাকিস্তানে ৩ হাজার ৬৮৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। আর এতে মৃত্যু হয় ৮৩ জনের।
গত বছর করোনা দেশটিতে আঘাত হানার পর এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৭ জন এতে আক্রান্ত হয়। মৃত্যু হয় ২৬ হাজার ৫৮০ জনের।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে টিকাদান কর্মসূচির ওপর জোর দিচ্ছে পাকিস্তান সরকার। জনগণকে টিকা নিতে উৎসাহিতও করা হচ্ছে।
তবে সম্প্রতি দেশটির উর্দুভাষী একটি স্থানীয় পত্রিকা তাদের এক নিবন্ধে করোনা টিকার ‘ক্ষতিকর প্রভাবের’ বেশ কয়েকটি দাবি করে।
নাম না জানা ওই পত্রিকায় ছাপানো নিবন্ধটির স্ক্রিনশট এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সব দাবির কোনোটিই সঠিক নয়।
নিবন্ধটিতে প্রথমে দাবি করা হয়, করোনা টিকা নেয়ার পর চার হাজার ব্রিটিশ নারীর পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেছে। ওই নারীদের জৈবিক কার্যক্রম টিকা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
করোনা টিকার এই ‘ক্ষতিকর প্রভাব’ জুনে ডেইলি মেইলে প্রকাশ করা হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নিবন্ধের স্ক্রিনশট। ছবি: এএফপি
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, করোনা টিকা নেয়ার পর প্রায় চার হাজার নারী পিরিয়ডে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা টিকার সঙ্গে পিরিয়ডে সমস্যার যোগসূত্র পাননি।
আগস্টে যুক্তরাজ্যের মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘করোনা টিকা নেয়ার পর পিরিয়ডে সমস্যার কথা জানানো হয়।
‘এর পরই বেশ কয়েকবার টিকার মূল্যায়ন হয়। তবে করোনার উপসর্গ বা টিকার সঙ্গে পিরিয়ডে জটিলতার কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।’
এ ছাড়া পাকিস্তানি ওই পত্রিকায় দাবি করা হয়, করোনা টিকার কারণে এক হাজারের বেশি ভারতীয়র মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এটি নেয়ার পর ভারতের ৩০ হাজার মানুষ দুঃসহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়।
পরিসংখ্যানটি ভারতভিত্তিক পত্রিকা দ্য হিন্দুস্তান টাইমস থেকে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
তবে হিন্দুস্তান টাইমসের ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো খবর বা নিবন্ধ পাওয়া যায়নি।
হিন্দুস্তান টাইমসও এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি নাকচ করেছে।
পত্রিকাটির সম্পাদক সুকুমার রঙ্গনাথন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো প্রতিবেদন আমরা ছাপাইনি।
‘কারণ টিকা নেয়ায় এক হাজারের বেশি ভারতীয়র মৃত্যুর ভীতিজনক পরিসংখ্যান কোনোভাবেই সঠিক নয়।’
পাকিস্তানি ওই পত্রিকার নিবন্ধে আরও দাবি করা হয়, করোনার টিকা নেয়ার পর তরুণদের হৃৎপিণ্ডে সমস্যা দেখা দেয়।
এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন উল্লেখ করে পত্রিকাটি।
করোনা টিকা নেয়ার পর তরুণদের হৃৎপিণ্ডের পেশি ও মেমব্রেনে ব্যথা হতে পারে বলে জানিয়েছিল সিডিসি।
তবে সিডিসি এও জানায়, এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই বিরল। করোনা টিকার সঙ্গে এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কার্যকারণ-সম্পর্কিত যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।