কাবুলে সীমিত পরিসরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কূটনৈতিকদের উপস্থিতি ফের কীভাবে নিশ্চিত করা যায় এবং সেখানে তাদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে তালেবানের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইইউ প্রতিনিধিদল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল জানান, এই ধরনের পারস্পরিক আলোচনা আফগানিস্তানকে একটি সন্ত্রাসী দেশে পরিণত হতে বাধা দেবে। পাশাপাশি, মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে যত্নবান হবে তালেবান।’
তবে জোসেফ বোরেল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে এমন বৈঠকের মানে কখনই তাদের গঠিত নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া নয়।
বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাবুলে ফেরত যাওয়ার পর সেইসব কূটনীতিকদের ভবন ও তাদের গাড়িবহরের নিরাপত্তা দেয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে। তবে পশ্চিমা কোনো কূটনীতিকের কাবুলে প্রত্যাবর্তন মানে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া নয়।
আফগানিস্তানের দখল তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর গত ১৫ আগস্টের পর থেকে এক লাখ ২২ হাজারের বেশি পশ্চিমাবিশ্বের বাসিন্দা ও কূটনৈতিকদের আকাশ পথে সরিয়ে নেয়া হয়।
কট্টর ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া দেশটিতে পশ্চিমা কূটনৈতিক ও দূতদের সরাসরি অবস্থানের বিষয়টি গত ৩০ আগস্ট স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক পশ্চিমাদেশ।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ২৭ দিন পর গত ১০ সেপ্টেম্বর কাবুল বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি চার্টার ফ্লাইট।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান ভূখণ্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির নেতৃত্বাধীন জোটের সেনা প্রত্যাহারের পর বৃহস্পতিবার প্রথম কাবুলে ছেড়ে যায় কোনো বাণিজ্যিক বিমান। কাতারের রাজধানী দোহায় অবতরণ করে সেটি।
ইইউ রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে তালেবানের এ বৈঠকটি কাতারে হয়েছে। ইইউ প্রতিনিধিরা সাফ জানিয়েছেন, তারা কাবুলে সীমিত সংখ্যক দূত পাঠানোর কাজ অব্যাহত রাখবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা দেশটির ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কাজ তদারকি করবে।
পাশাপাশি, কাতার এবং পাকিস্তানে ইইউর আফগানিস্তানবিষয়ক কার্যালয়গুলো মূলকেন্দ্র হিসেবে কাজ এগিয়ে নিবে।
ইইউভুক্ত কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র জানিয়েছে, এমন সংলাপ চলমান রাখলে ও কাবুলে দূতদের উপস্থিতি ফের নিশ্চিত করতে পারলে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এদিকে, তালেবান প্রতিনিধিদল আশ্বস্ত করেছে, তারা নারী মানবাধিকার কর্মীদের নির্বিঘ্নে সেখানে কাজ করার অনুমতি দিবে। তবে গত মাসের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের দখল তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর থেকে নারীদের ওপর হয়রানি ও সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।