আফগানিস্তানের পাঞ্জশিরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চলাকালে তালেবানকে সহযোগিতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) মঈদ ইউসুফ।
সিএনএনকে দেয়া বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারে তিনি ওই অভিযোগ নাকচ করেন।
পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ‘মিথ্যা’ সংবাদ প্রকাশের জন্যও দায়ী করেন ইউসুফ।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঞ্জশিরে প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে তালেবানকে পাকিস্তানের সহযোগিতার অভিযোগ তোলে আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী বাহিনী ও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পাঞ্জশিরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তালেবানকে ড্রোন বা অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল কি না, সিএনএন সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনের প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ বলেন, ‘এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’
ইউসুফ বলেন, ‘পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা দেশটির দুর্দশার কারণ।
‘আফগানিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তারাও দেশটির সংকটাপন্ন পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তা সত্ত্বেও আফগানসংকটের জন্য বিশ্ব পাকিস্তানকে দায়ী করে।’
পাঞ্জশিরে তালেবানকে পাকিস্তান ড্রোন দিয়ে আসলেই সহযোগিতা করেছিল কি না, ফের এ প্রশ্ন করা হলে জবাবে ভারতের নিউজ চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখান ইউসুফ।
স্ক্রিনশটগুলোর একটি ইউসুফ দেখিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ওড়ার ছবি এটি। অথচ ভারতের মূলধারার সংবাদমাধ্যম বলছে পাঞ্জশিরে পাকিস্তান তাদের বিমান ওড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংবাদ তৈরিতে লাখ লাখ ডলার খরচ করে ভারত।’
এনএসএর উপদেষ্টা ইউসুফ যে ছবিটি সিএনএনকে দেখান, তা কয়েকজন টুইটারে শেয়ারও করেছিলেন।
তাদের দাবি, পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর জেট প্লেন গুলি করে ভূপাতিত করে পাঞ্জশিরের প্রতিরোধ বাহিনী।
তবে ডনের ফ্যাক্টচেক দল ও অন্য সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তোলা হয় ছবিটি।
চলতি মাসের শুরুতে পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীদের পরাজিত করে প্রদেশটি দখলে নেয় তালেবান।
তালেবান তাদের সরকার ঘোষণার কয়েক দিন আগে কাবুলে যান পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান ফয়েজ হামিদ।
আফগানিস্তানে তালেবানের নতুন সরকার গঠনে পাকিস্তানের ভূমিকা কী, এ নিয়েও প্রশ্ন করেন সিএনএন সাংবাদিক।
জবাবে ইউসুফ পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আইএসআই প্রধান আফগানিস্তানে যাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস আফগানিস্তানে যাননি?’
ইউসুফ বলেন, ‘আইএসআই প্রধান আফগানিস্তানে গেছেন। ভবিষ্যতেও যাবেন।
‘আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে।
‘সীমান্তে নিরাপত্তার বিষয়ে আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরকার রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। এ জন্য আফগানিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রয়োজন হলে তা করা হবে।’