ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে পাঁচ দেশের ব্রিকস সম্মেলনে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্ত-আফগান সংলাপ হোক যাতে স্থিতিশীলতা, শান্তি, আইনশৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করা যায়। যদিও শীর্ষ সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘ধারাবাহিকতা, একত্রীকরণ এবং ঐকমত্যের জন্য সহযোগিতা’।
শীর্ষ সম্মেলন শেষে গৃহীত ‘নয়াদিল্লি ঘোষণাপত্রে’ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
পাঁচ দেশের গোষ্ঠী (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) তাদের ঘোষণাপত্রে ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রাধিকারসহ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর আফগান ভূখণ্ডকে সন্ত্রাসী অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহার করা এবং অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর চেষ্টাকে প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ১৩তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন।
শীর্ষ সম্মেলনে এই বিষয়ে খুব জোরালো বক্তব্য দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য একটি অস্থিতিশীল আফগানিস্তানের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বলেন, আফগানিস্তান তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য হুমকি, মাদক পাচার ও সন্ত্রাসের উৎস হওয়া উচিত নয়। আফগানিস্তানের নাগরিকরা তাদের রাষ্ট্র কেমন হবে তা নির্ধারণ করার অধিকার প্রয়োগ করার যোগ্য। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সেনা প্রত্যাহার নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে।
‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং কৌশলগত স্থিতিশীলতার ব্যবস্থা নিম্নগামী হয়ে গেছে। আঞ্চলিক দ্বন্দ্বগুলো থামেনি।’
পুতিন বলেন, ‘দেশের মানুষ যে ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য এবং পরম্পরাগত ঐতিহ্য অনুসরণ করেছে তা বিবেচনায় না নিয়ে তথাকথিত গণতন্ত্র গড়ে তোলা যায় না। পরিবর্তনের এ ধরনের প্রয়াসের ফলে অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ব্রিকস গত দেড় দশকে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। মোদি তার ভাষণে বলেন, ‘আজ আমরা বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির জন্য একটি প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর।’ তিনি তার সভাপতিত্বকালে ভারতকে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়ার জন্য সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।