একের পর এক হামলার মুখে পড়ে ত্রিপুরায় একই সুরে বিজেপিকে আক্রমণের নিশানা করেছে সিপিএম ও তৃণমূল।
কয়েকদিন আগে ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ধনপুরে যাওয়ার পথে তার গাড়িবহরে বিজেপির দুষ্কৃতকারীদের হামলার অভিযোগের পর বুধবার গোমতী জেলার উদয়পুরে ডিওয়াইএফআইয়ের একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও বিজেপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ত্রিপুরা।
আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় আগরতলা, বিশালগড়, কাঠালিয়ায় সিপিএমের পার্টি অফিসে। একাধিক গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি, আগুন দেয়া হয় রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী রতন ভৌমিকের গাড়িতে। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দপ্তরেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
বুধবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ‘মানুষ চাকরি চায়। খাদ্য চায়। গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায়। এই দাবিকে দাবিয়ে রাখতে এরকম আক্রমণ করা হচ্ছে। বিজেপির মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে। ওরা নিজেরাও তা বুঝতে পারছে।’
অন্যদিকে ত্রিপুরার কৃষিমন্ত্রী বিজেপির প্রাণজিৎ সিংহ রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, ‘অনুমতি না নিয়ে মিছিল বের করেছিল সিপিএমের যুব সংগঠন। বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী মফিজ মিঞাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এমন সংঘর্ষের জন্য দায়ী তারাই।’
কিছুদিন আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজা দিতে যাওয়ার সময় তার গাড়িবহরে বিজেপির দুষ্কৃতিকারীরা হামলা করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূলের যুব নেতৃত্বের ওপরও বিজেপির দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের সদস্যদের হোটেল বন্দি করে রাখার অভিযোগ রয়েছে বিপ্লব দেবের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে।
সিপিএমের যুব সংগঠনের মিছিলে বিজেপির হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিন্দা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের রাজ্যে দুয়ারে গুন্ডার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’
বুধবারের ঘটনার পর জয়া দত্ত ও আশীষ লাল সিংহের মতো তৃণমূল নেতৃত্ব সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে কথা বলেন। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সুস্মিতা দেব অগ্নিদগ্ধ একটি সংবাদমাধ্যমের অফিস পরিদর্শনে যান। এ ঘটনায় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিজেপির তীব্র নিন্দা করেন।
বৃহস্পতিবার বিজেপির সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ত্রিপুরা জুড়ে বিশাল মিছিল করে সিপিএম। এদিন মানিক সরকার বলেন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ঘৃণা বাড়ছে।’
বিজেপির পাল্টা অভিযোগ সিপিএম কর্মীরা তাদের আক্রমণ করেছে। এমন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে অগ্নিদগ্ধ ত্রিপুরার রাজনীতি।
২০২৩ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে দলীয় সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে তৃণমূলও সিপিএমের মতো বিজেপির হামলার মুখে পড়ছে। এই পরিস্থিতিই বিজেপিবিরোধী জোট গঠনে সিপিএম ও তৃণমূলকে কাছাকাছি আনছে।