করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালাবে, লিবিয়ার প্রয়াত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে।
২০০৯ সালে জাতিসংঘের এক সভায় বক্তব্য রাখা গাদ্দাফির একটি ছবি ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারে পোস্ট করা হয়।
ওই ছবির শিরোনামে লেখা ‘করোনাভাইরাস ও গাদ্দাফির ভবিষ্যদ্বাণী’।
আর এটির গায়ে সভায় গাদ্দাফির বক্তব্যের একটি অংশ লেখা, ‘তারা নিজেরাই ভাইরাস সৃষ্টি করে মানুষের কাছে প্রতিষেধক বিক্রি করবে।
‘তারা ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পেতে সময়ক্ষেপণের ভান করবে, যেখানে তারা সমাধান আগে থেকেই জানে।’
বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক দল ভাইরাল ছবির এ দাবিকে ভুল হিসেবে উল্লেখ করেছে।
তাদের ভাষ্য, গাদ্দাফির ২০০৯ সালের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
১৯৬৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা লিবিয়া শাসন করেন গাদ্দাফি।
২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে রাজি হননি তিনি।
আর এতে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ২০১১ সালের অক্টোবরে বিরোধীদের হাতে প্রাণ হারান গাদ্দাফি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে চীনে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। পরের বছরের মার্চে এটিকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
২০০৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬৪তম সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন গাদ্দাফি। চার দশক ধরে লিবিয়ার ক্ষমতায় থাকা গাদ্দাফি ওই প্রথম জাতিসংঘের সভায় বক্তব্য দেন।
টানা প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তব্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সংস্কারের আহ্বান জানান গাদ্দাফি।
এ ছাড়া বক্তব্যের একপর্যায়ে ওষুধ ও টিকা বিশ্বজুড়ে বিনা মূল্যে বিতরণের কথাও বলেন তিনি।
তার মতে, টিকা উৎপাদন করে পুঁজিবাদী কোম্পানিগুলো বিপুল অর্থের মুনাফা করছে।
সভায় গাদ্দাফি বলেন, ‘আজ বিশ্বজুড়ে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কাল ফিশ ফ্লুর প্রকোপ দেখা দেবে।
‘কারণ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কখনো কখনো আমরা সেসব উৎপাদন করি।’
তিনি বলেন, ‘এটি এখন ব্যবসা। পুঁজিবাদী কোম্পানিগুলো ভাইরাস উৎপাদন করে, যাতে তারা টিকা তৈরি করে বিক্রি করতে পারে।
‘এটি খুবই লজ্জাজনক ও নৈতিকতাবিবর্জিত কাজ। টিকা ও ওষুধ বিক্রয়যোগ্য হতে পারে না।’
২০০৯ সালের এপ্রিলে প্রথম সোয়াইন ফ্লু শনাক্ত হয়।
ওই বছরেরই জুন থেকে ২০১০ সালের আগস্ট পর্যন্ত এটিকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।