তালেবানের কাবুল দখলের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আফগানিস্তানের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
নিজের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘স্যান্ডেল ছেড়ে জুতা পরার সময় পাইনি, টাকা নেব কখন?’
দেশ ছেড়ে পালিয়ে ঘানি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সে দিনই কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে একটি হেলিকপ্টারে করে দেশ ছাড়েন আশরাফ ঘানি।
দেশ ত্যাগ বিষয়ে সে সময় ঘানির বক্তব্য ছিল, রক্তপাত এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দেশ ছাড়ার সময় তিনি হেলিকপ্টারে করে প্রায় ১৭ কোটি ডলার নিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ উঠে।
দেশ ছাড়ার বিষয়টি তুলে ধরে বুধবার আরব আমিরাত থেকে এক বিবৃতিতে ঘানি বলেন, ‘কাবুল ত্যাগ করা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।’
বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এর সমাপ্তি অন্যরকমও হতে পারত।’
টুইটারে দেয়া এক পোস্টে ঘানি বলেন, ‘ব্যাপক সহিংসতা এড়াতে দেশ ছাড়ার বিকল্প আর কিছু তার কাছে ছিল না।’
টুইটে তিনি লেখেন, ‘প্রাসাদের নিরাপত্তার তাগিদ থেকেই তিনি চলে গেছেন। ১৯৯০-এর দশকের গৃহযুদ্ধের সময় শহরের রাস্তা-ঘাটে যে যুদ্ধ হয়েছিল, সেই একই অবস্থা এবারও হতে পারত। সেই ঝুঁকি নিয়েই সেখানে থাকতে হতো। সে জন্যই আমাকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেয়া হয়।’
ঘানির মতে, এতে করে তিনি কাবুল ও সেখানকার ৬০ লাখ মানুষকে বাঁচাতে পেরেছেন।
গত ২০ বছর ধরে তিনি আফগানিস্তানে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।
নিজের পূর্বসূরিদের মতো তার রাজনৈতিক অধ্যায় শেষ হওয়ায় আফসোস প্রকাশ করেন ঘানি।
৭২ বছর বয়সী ঘানি ১৮ আগস্ট এক ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তাছাড়া তাকে হত্যা করা হতো।
এমনকি প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তার কক্ষ তল্লাশি করে তালেবান।
বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ‘যেখানে আমি নিজের জুতা বদলের সুযোগ পাইনি, সেখানে কীভাবে এতো অর্থ নিয়ে যাব?’
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ২৪ দিন পর গতকাল বুধবার তালেবান তাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে।