নির্বাচন এলেই রাষ্ট্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে বিজেপি সরকার বিরোধীদের হয়রানি করে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, সংস্থার ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে ঠেকানো যাবে না।
কলকাতার চেতলা অহীন্দ্র মঞ্চের কর্মিসভায় বুধবার এসব কথা বলেন ভবানীপুর উপনির্বাচন কেন্দ্রের প্রার্থী মমতা।
তিনি বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে নাশ করার চেষ্টা করে বিজেপি। কিন্তু কারও সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে উঠতে পারেনি। এজেন্সিসহ সব শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি। কংগ্রেসকেও তারা এজেন্সি দেখিয়েছিল।
‘এখন আমাদের যাকে খুশি ডাকছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, সিবিআই। কিন্তু সংস্থার ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে আটকানো যাবে না।’
কয়লা পাচারের ঘটনায় দুই দিন আগে ভারতের দিল্লির ইডি অফিস তলব করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। টানা ৯ ঘণ্টা জেরার পর বুধবার আবার তাকে ডাকা হয়।
এ বিষয়ে তৃণমূল নেত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এজেন্সি নাচতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মিলে যা ইচ্ছা তাই করছেন। অভিষেককে ডেকে পাঠাল। এখন আইকোর চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নোটিশ পাঠিয়েছে ইডি।’
তিনি বলেন, ‘বিজেপির কোনো সংস্থা ডাকলে আমাদের যেতে হয়। কিন্তু আমাদের সংস্থা বিজেপির কাউকে ডাকলে তারা হাজিরা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না।’
সভায় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীর নাম উল্লেখ না করে মমতা বলেন, ‘বিজেপিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের জন্য আদালত থেকে অর্ডার আনা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে নাকি এফআইআর করা যাবে না। কেন? ভগবানের জ্যেষ্ঠ পুত্র নাকি?'
অভিষেককে দিল্লিতে ডাকা নিয়ে মমতা বলেন, ‘কলকাতার মামলা দিল্লিতে কেন? এখানকার ইডি অফিসে ডাকতে পারত। অভিষেকের বিরুদ্ধে কেস থাকলে প্রমাণ করুক।’
ইডি সূত্রে জানা যায়, কয়লা পাচারের ঘটনায় অভিষেকের নিজস্ব ও পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস জানতে চায় তদন্তকারীরা। প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৪ দশমিক ৩৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা । কিন্তু তাকে জেরার পরও কোনো তথ্য পাননি তারা। তাই আবার ডেকেছেন তাকে। ডাকা হতে পারে প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালকদেরও।
এ বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ইডির গোয়েন্দাদের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনুক। ১০ টাকার লেনদেনও প্রমাণিত হলে ফাঁসিতে ঝুলতে রাজি আছি।’