বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ভারতের ছত্রিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেলের বাবা নন্দ কুমার বাঘেলকে।
রাজ্যের রায়পুর জেলা আদালত বুধবার নন্দকে ১৫ দিনের জন্য কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর নন্দ কুমারকে গ্রেপ্তার করে ছত্তিশগড় থানার পুলিশ।
৮৬ বছর বয়সী নন্দ ‘মতদাতা (ভোটার) জাগৃতি মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের শীর্ষ নেতা। ছেলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই তার।
নন্দ কুমারের আইনজীবী জানান, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ার পর তিনি জামিনের আবেদন করেননি। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর। ওই দিন তিনি আদালতে হাজিরা দেবেন।
ছত্রিশগড় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে সাংবাদিকদের সঙ্গে নন্দ কুমারের আলাপচারিতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে নন্দ কুমারকে বলতে শোনা যায়, ‘দেশের সমস্ত গ্রামবাসীকে বলছি, কোনো ব্রাহ্মণকে ঢুকতে দেবেন না। আমি সমস্ত সম্প্রদায়ের সঙ্গেই কথা বলব, তারা যেন ব্রাহ্মণদের বয়কট করেন। তাদের নদীর তীরেই ফেরত পাঠাতে হবে।’
এ মন্তব্যের জেরেই বিতর্ক শুরু হয়। ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি অবনেশ পাণ্ডে, সৌমিত্র মোহন মিশ্রসহ অন্য সদস্যরা নন্দ কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
তাদের দাবি, নন্দ কুমারের উসকানিমূলক মন্তব্যের জেরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়াতে পারে। সামাজিক সম্প্রীতিও নষ্ট হতে পারে। একই সঙ্গে তার এ মন্তব্য ব্রাহ্মণদের ভাবাবেগেও আঘাত করেছে।
এরপরই রায়পুরের দীনদয়াল নগর থানা পুলিশ নন্দ কুমারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ (বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসা, শত্রুতা ও ঘৃণা প্রচারের অপরাধ) এবং ৫০৫-এ (বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসায় উসকানি দেয়া এবং ভয় ছড়ানো) ধারায় অভিযোগ করে।
বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল বলেন, ‘ছেলে হিসেবে বাবাকে খুবই সম্মান করি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাউকে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করার সুযোগ দিতে পারি না। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।’
তিনি বলেন, ‘ছত্তিশগড় সরকার সব ধর্ম, জাতিকে সম্মান করে। একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বাবার মন্তব্যের কারণে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে। তার এ ধরনের মন্তব্যে আমিও দুঃখ পেয়েছি।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বাবার সঙ্গে তার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও মতাদর্শ সম্পূর্ণ আলাদা। রাজ্যের শান্তি বজায় রাখতে নিজের বাবার বিদ্বেষমূলক মন্তব্যকেও তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন না।
এর আগেও নন্দ কুমারের বিরুদ্ধে অবমাননামূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল।