সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি জ্বলন্ত এক উড়োজাহাজের ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে।
এতে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ওই বিমান আফগানিস্তানে বিধ্বস্ত হয়েছে। ওই ঘটনায় শত শত বেসামরিক নাগরিক ও সেনা হতাহত হন।
ভাইরাল ছবিটির শিরোনামে একজন লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানের ফারাহ প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমান সি-১৩০ বিধ্বস্ত হয়।
‘কাবুল বিমানবন্দর থেকে কাতারের উদ্দেশে যাচ্ছিল বিমানটি। বিমান দুর্ঘটনায় সেনাসহ অনেক বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান।’
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লিউএ) ভাইরাল ছবিটির দাবি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে।
এতে জানা যায়, ছবিটি ১৩ বছরের পুরোনো। ওই সময় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতিগ্রস্ত একটি বিমানের নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ছবিটি অ্যালামির ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। ২০০৮ সালের ৭ জুলাইয়ে তোলা ওই ছবিতে জেফ্রি অ্যালেন নামের এক টেকনিক্যাল সার্জেন্টকে কৃতিত্ব দেয়া হয়।
ছবির শিরোনামে অ্যালামি বলছে, ‘৭ জুলাই ইরাকে স্যাথার বিমানঘাঁটিতে ৪৪৭তম সিভিল ইঞ্জিনিয়ার স্কোয়াড্রনের বিস্ফোরক দল সি-১৩০ হারকিউলিস বিমানের দেহ থেকে ডানা বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন করে।
‘ক্ষতিগ্রস্ত ওই বিমান সহজে যাতে পরিবহন করা যায়, এ লক্ষ্যে এটির বিভিন্ন অংশে নিয়ন্ত্রিতভাবে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ছোট ছোট টুকরা করা হয়।
‘২৭ জুন উড্ডয়নের একটু পরেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তরে এক মাঠে জরুরি অবতরণ করে সি-১৩০ বিমানটি।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ওয়েবসাইটেও উড়োজাহাজটির ছবিসহ বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়।
সেখানেও টেকনিক্যাল সার্জেন্ট অ্যালেনকে কৃতিত্ব দেয়া হয়। ২০০৮ সালের ১১ জুলাই ওই বিমানসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটটিতে প্রকাশ হয়।
ওয়েবসাইটটির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ৭ জুলাই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর-পূর্বে পতিত এক জমিতে সি-১৩০ হারকিউলিস বিমানটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ছোট ছোট অংশে ভেঙে ফেলা হয়।
ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২৭ জুন থেকে পরিবহন বিমানটি ওই জমিতে ছিল। উড্ডয়নের পরপরই এটির ক্রু সেখানে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছিলেন।
‘বিমানটিকে ভেঙে ফেলে পরে দেশে ফেরানো হয়।’
আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের একটি ফারাহ। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটির অবস্থান।
ফারাহ বা আফগানিস্তানের অন্য কোথাও সম্প্রতি বিমান দুর্ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।