গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় আফগানিস্তান। পশ্চিমা দেশ সমর্থিত আফগান সরকার হটানোর পর আগামী সপ্তাহে তারা নতুন সরকারের ঘোষণা দেবে।
এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির এক রাজনীতিকও ওই ভিডিও শেয়ার করেন। এতে দাবি করা হয়, হেলিকপ্টার থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যা করছে তালেবান।
৩০ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর টেড ক্রুজ টুইটারে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেয়া পদক্ষেপে আফগানিস্তানে নেমে আসা ভয়াবহ বিপর্যয়ের চিত্র এটি।
‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার থেকে এক ব্যক্তিকে ঝুলিয়ে হত্যা করছে তালেবান।’
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাইরাল ভিডিওটির দাবি সঠিক নয়। ভিডিওটি নির্ভরযোগ্য হলেও এটিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ওই ব্যক্তির গলায় দড়ি নেই বরং তার শরীরের চারপাশ দড়িতে বাঁধা।
আফগানিস্তানের সাংবাদিকদের ভাষ্য, ঝুলন্ত ব্যক্তি তালেবানের এক সদস্য। সংগঠনের পতাকা হেলিকপ্টার থেকে একটি খুঁটিতে বাঁধার চেষ্টা করছেন তিনি।
আফগানিস্তানের সাংবাদিক সাদিকুল্লাহ আফগান টুইটারে ৩০ আগস্ট প্রথম ভিডিওটি পোস্ট করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কান্দাহারের বাসিন্দা তিনি।
আফগান এএফপিকে জানান, হেলিকপ্টার থেকে ঝুলন্ত ব্যক্তির গলায় ফাঁস নেই। তালেবানেরই সদস্য তিনি।
আফগান বলেন, ‘১০০ মিটার উঁচু খুঁটিতে পতাকা লাগানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি তা পারেননি।’
ভাইরাল ভিডিওটির ভালো মানের দুটি সংস্করণ এএফপিকে দেন সাংবাদিক আফগান।
এতে স্পষ্ট দেখা যায়, উঁচু অবস্থানে ওই ব্যক্তিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য তার শরীরের চারদিক যথাযথভাবে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে।
বুধবার ওই খুঁটির একটি ছবি পাঠান আফগান। তাতে দেখা যায়, খুঁটির ওপরে উঠতে এর চারদিকে মাচা তৈরি করছে তালেবান।
কান্দাহারে এএফপির এক সাংবাদিকও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে কথা বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, হেলিকপ্টার থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে কাউকে হত্যা করা হয়নি।
আফগানিস্তানের আরেক সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি টুইটবার্তায় বলেন, ‘হেলিকপ্টারের পাইলট যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
‘ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তালেবান যোদ্ধা সংগঠনের পতাকা উঁচু খুঁটি থেকে আকাশে ওড়াতে চেয়েছিলেন। তবে খুঁটিতে তা লাগাতে পারেননি তিনি।’