আফগানিস্তানে তালেবানের প্রথম শাসনামলের মতো এবারও দেশটির মন্ত্রিসভায় থাকছেন না কোনো নারী।
তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ নেতার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এর মধ্য দিয়ে কাবুল পতনের পর মন্ত্রিসভায় নারীর অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকার থেকে সরে আসছে তালেবান।
আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে তালেবান। কাল জুমার নামাজের পর নতুন সরকারের ঘোষণা আসতে পাারে বলে তালেবানের দুটি সূত্র এএফপিকে জানায়।
কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই বিবিসি পাশতুকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আফগান নারীরা দেশের বিভিন্ন সংস্থায় আগের মতোই কাজ করতে পারবেন।
‘তবে নতুন মন্ত্রিসভা বা সরকারের শীর্ষ কোনো পদে তাদের হয়তো নেয়া হবে না। নতুন সরকারে নারীদের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা তেমন একটা নেই।’ বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে কাজের অধিকার এবং নতুন সরকারে নারীদের রাখতে বিক্ষোভ করেন প্রায় অর্ধশত আফগান নারী।
বিক্ষোভে নারীরা বলেন, ‘শিক্ষা, কাজ করা ও নিরাপত্তা আমাদের অধিকার। আমরা ভীত নই। আমরা ঐক্যবদ্ধ।’
ইরান সীমান্তবর্তী হেরাত আফগানিস্তানের তুলনামূলক অগ্রসর জনপদ। সেখানকার মেয়ে শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে স্কুলে ফিরে গেছে।
বিক্ষোভ আয়োজনকারীদের একজন বাসিরা তাহেরি। তিনি এএফপিকে জানান, নতুন সরকারে নারীদের তালেবান রাখুক, এটা তিনি চান।
তাহেরি বলেন, ‘আমরা চাই, তালেবান আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুক, আমাদের পরামর্শ নিক।
‘তালেবানের বিভিন্ন বৈঠকে আজ পর্যন্ত আমরা নারী কোনো প্রতিনিধি দেখিনি।’
কাবুল পতনের পর ১ লাখ ২২ হাজার আফগান তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।
এদের মধ্যে আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তালেবানের কোনো নেতার সাক্ষাৎকার নেয়া নারী সংবাদকর্মী বেহেশতা আরগান্দও ছিলেন।
পরিবার নিয়ে কাতারে অবস্থান করা টোলোনিউজের সাবেক এই কর্মী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আফগান নারীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
‘তারা খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।’
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের দুদিন পর আফগানিস্তানের নতুন সরকারে অংশ নিতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল তালেবান।
সে সময় তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগানি বলেছিলেন, ‘তালেবান নারীদের ভোগান্তির কারণ হতে চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী তাদের সরকারকাঠামোয় থাকা উচিত।’
সোমবার গভীর রাতে আফগানিস্তান ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা। দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তান বিদেশি সেনামুক্ত হয়।
আফগানিস্তানের বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ব্যাপক মাত্রায় গণ-অনাস্থার মধ্যেই শুক্রবার নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা দিচ্ছে তালেবান।
কাবুল পতনের পর বিভিন্ন সময়ে দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকার করেছিল তালেবান।