কাতারে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তালেবানের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা।
কাতারের রাজধানী দোহায় দুই পক্ষের মধ্যে মঙ্গলবার ওই বৈঠক হয় বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার পর ভারতের সঙ্গে সংগঠনটির এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তালেবানের অনুরোধে দোহায় সংগঠনটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান শের মোহাম্মদ আব্বাস স্ট্যানেকজাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল।
ভারতের দীর্ঘদিনের শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তালেবানের। আর এ বিষয়টি ভারতের উদ্বেগের অন্যতম কারণ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তার বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া ভারতবিরোধী গোষ্ঠী আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে বলে ভারতের শঙ্কার কথা ওই বৈঠকে জানান রাষ্ট্রদূত মিত্তাল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘তালেবানের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মিত্তালকে আশ্বস্ত করে জানান, ভারতের ওইসব উদ্বেগ বা শঙ্কা ইতিবাচকভাবে দেখা হবে।’
ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি স্ট্যানেকজাইয়ের বরাতে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে তালেবান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক চায়।
এর কয়েক দিন পরেই তালেবান নেতার সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হলো।
এ বিষয়ে তালেবানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আফগানিস্তানে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ভারতের।
তবে তালেবানের সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রায় সংগঠনটির সঙ্গে যোগাযোগের সূত্রপাত না করায় সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত সরকার।
চলতি বছরের জুনে দোহায় তালেবানের কয়েক নেতার সঙ্গে ভারতের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয় বলে দেশটির সরকারের কয়েকটি সূত্র জানায়।
ওইসব সূত্র জানিয়েছে, মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতশাসিত কাশ্মীরে ভারতবিরোধী সশস্ত্র যোদ্ধারা তালেবানের সাম্প্রতিক বিজয়ে উল্লসিত হতে পারে বলে শঙ্কা ভারতের।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মিত্তাল তালেবানের নেতাকে বলেন, কোনো ধরনের ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাসবাদের জন্য নিজেদের মাটি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেয়া উচিত হবে না আফগানিস্তানের।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান।
ওই সময় রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে মিলে তালেবানবিরোধী সশস্ত্র জোট নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সমর্থন দিয়েছিল ভারত।
আশির দশকে আফগান কর্মকর্তা হিসেবে ভারতীয় সামরিক একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন স্ট্যানেকজাই।