দীর্ঘ দুই দশকের যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা প্রত্যাহার করেছে। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করল আফগানিস্তান।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন মঙ্গলবার এসব মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিকল্পিত ও তড়িঘড়ি প্রত্যাহারের সমালোচনা করে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর তালেবানের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক’ সম্পর্ক আরও গভীর করবে বেইজিং।
সব সেনা ও নাগরিক প্রত্যাহারের মাধ্যমে সোমবার রাতে আফগানিস্তান থেকে হাত গোটায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা আফগানিস্তান ছাড়ায় দেশজুড়ে বিজয় উদযাপন করছে তালেবান।
চীনের মুখপাত্র ওয়েনবিন বলেন, ‘বিদেশি দখলদারদের হাত থেকে অবশেষে নিজেদের মুক্ত করতে পেরেছে আফগানিস্তানি।
‘দেশ পুনর্গঠন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার নবযাত্রায় আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ।’
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে চীনের দূতাবাসের কার্যক্রম চলমান।
অবশ্য আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটায় গত কয়েক মাস আগে নিজেদের সব নাগরিককে দেশে ফেরাতে শুরু করে চীন।
আফগানিস্তানের কার্যত সরকার হিসেবে তালেবানকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি চীন।দেশটির শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু মুসলমান উইঘুর সম্প্রদায়ের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ তালেবান সমর্থন দিতে পারে বলে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে চীন।
ওয়েনবিন বলেন, ‘আমরা আশা করি, আফগানিস্তানে সবার অংশগ্রহণে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন হবে।
‘একই সঙ্গে সব ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড সেখানে বন্ধ হবে।’
গত মাসে চীনের বন্দরনগরী তিয়ানজিনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করে তালেবানের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদল।
সন্ত্রাসীদের আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি গাড়তে দেয়া হবে না বলে ওই বৈঠকে তালেবানের পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, আফগানিস্তানে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে স্থিতিশীল ও সহযোগিতামূলক সরকার চায় চীন।
বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহায়তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে চীনকে দেখছে তালেবান।
আফগানিস্তানে কপার ও লিথিয়ামের বিশাল খনির দিকে নজর চীনের বিভিন্ন কোম্পানির।
তবে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দেশটিতে বিনিয়োগে চীন আগ্রহী হবে না মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।