অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর সিডনিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেয়ার পর দুই শিশুর মৃত্য হয় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও ক্লিপে দাবি করা হয়েছে।
হাজার হাজার মানুষ ওই ভিডিও ক্লিপ দেখেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক দলের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকা নেয়ার পর মঙ্গলবার পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় কোনো শিশুর মৃত্যু ঘটেনি।
১৮ বছরের নিচের শিশুদের শুধু ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা দেয়ার অনুমোদন দেয় অস্ট্রেলিয়া।
১৯ আগস্ট ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল ওই ভিডিও ক্লিপে লেখা, করোনা টিকা নিতে স্টেডিয়ামে জড়ো হওয়া ২৪ হাজার শিশুর মধ্যে দুই শিশু টিকা নেয়ার পর মারা গেছে।
এএফপির অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৮ আগস্ট ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিও থেকে ভাইরাল ভিডিও ক্লিপটি নেয়া হয়।
ওই ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারকারী স্টু পিটার্স দাবি করেন, অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক এক সদস্য তাকে জানিয়েছেন, নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর একপর্যায়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
পিটার্স বলেন, ‘করোনা টিকা দেয়ার পর দুই শিশু এরই মধ্যে মারা গেছে।’
করোনা সংক্রমণ নতুন করে হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় মধ্য আগস্ট থেকে নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনির পশ্চিমাঞ্চলে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া শুরু করে অঙ্গরাজ্যটির কর্তৃপক্ষ।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার সঙ্গে মৃত্যুর সংশ্লিষ্টতা পায়নি টিকার সুরক্ষা পর্যবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিজিএ) ।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, ‘ফাইজারের টিকা নেয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর জানায়নি টিজিএ।’
সিডনির অন্যতম বড় টিকাদান কেন্দ্র কুদোস ব্যাংক এরিনায় টিকা নেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও সঠিকভাবে বলেনি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি।
টিকাদান কর্মসূচি ঘোষণার সময় নিউ সাউথ ওয়েলসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্র্যাড হ্যাজার্ড জানান, কুদোস ব্যাংক এরিনা টিকাকেন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিডনির স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা জানায়, ২৪ হাজার নয়, ওই টিকাকেন্দ্রে ১৫ হাজার ৩৯০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে।
করোনা প্রতিরোধী অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়ার পর এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। কেবল প্রাপ্তবয়স্কদেরই ওই টিকা দেয়া হয়।