বিদেশি ভূখণ্ডে দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করে সোমবার আফগানিস্তান ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কাবুল বিমানবন্দর ছাড়ার আগে ৫ হাজার ৮০০ সেনা কাজ করেছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সেনারা কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিজেদের নাগরিক, দ্বৈত নাগরিক, আফগানসহ নানা ধরনের মানুষকে সরিয়ে নিয়েছেন।
১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে দেশটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগের দিন থেকে এই উদ্ধারকাজ শুরু করেন সেনারা।
বিবিসির খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার রাতে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র মিশনের ইতির ঘোষণা দেন।
এ সময় তিনি জানান, ১৪-৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষকে বিভিন্ন দেশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
যার মধ্যে ৬ হাজার আমেরিকান নাগরিক।
তালেবানের সঙ্গে করা এক চুক্তি অনুযায়ী, ৩১ আগস্টের মধ্যে কাবুল বিমানবন্দর থেকে উদ্ধারকাজ শেষ করে তার নিয়ন্ত্রণ তালেবান যোদ্ধাদের হাতে দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ এক হামলা চালানো হয়। হামলায় ১৩ আমেরিকান সেনাসহ নিহত হন ১৭০ জন। হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রোভিন্স বা আইএস-কে, যা আইএসএর একটি শাখা।
তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন ৩১ আগস্টের আগেই কাবুল থেকে উদ্ধারকাজ শেষ করা হবে।
তার ঘোষণার পর উদ্ধার তৎপরতা বাড়ান সেনারা। আর এক দিন আগেই উদ্ধার কাজ শেষ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, উদ্ধারকাজ শেষ ঘোষণা হলেও ১০০ থেকে ২০০ আমেরিকান আফগানিস্তানে থেকে গেছেন। তারাও দেশ ছাড়তে চান। তবে তালেবান স্বাধীনভাবে তাদের দেশ ছাড়তে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় শেষ সময়ে আর তাদের সরিয়ে নেয়া হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, ব্রিটেন আফগানিস্তান থেকে ১৫ হাজার মানুষকে তাদের দেশে নিয়েছে।
কানাডা বলছে, তারা উদ্ধার অভিযানে ৩ হাজার ৭০০ কানাডিয়ান ও আফগান নাগরিককে তাদের দেশে নিয়ে গেছে।
জার্মানি নিয়ে গেছে ৫ হাজার ৩০০ জনকে। এর মধ্যে ৪ হাজারের বেশি আফগান নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটি।
ইতালি ৪ হাজার ৮৯০ আফগানসহ মোট ৫ হাজার মানুষকে তাদের দেশে নিয়ে গেছে।
ফ্রান্স বলছে, এই কয়েক দিনে তারা ২ হাজার ৬০০ আফগানসহ ৩ হাজার মানুষকে তাদের দেশে সরিয়ে নিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ৩ হাজার ২০০ নাগরিক, আফগান ভিসাধারীসহ দেশটিতে ফিরিয়ে নিয়েছে ৪ হাজার ১০০ জনকে।
নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া এক হাজারের বেশি মানুষকে কাবুল এয়ারপোর্ট থেকে সরিয়ে নিতে পেরেছে।