১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘দ্য লাস্ট আমেরিকান সোলজার’-এর পটভূমি ছিল ভিয়েতনাম যুদ্ধ। প্রায় চার দশক পর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সিনেমাটির বাস্তব চরিত্র হয়ে ধরা দিলেন মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহিউ।
বিদেশি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধ হিসেবে ভিয়েতনামকেও ছাড়িয়ে গেছে আফগানিস্তান। ২০ বছরের সামরিক অভিযানে আনুষ্ঠানিক ইতি টেনে স্থানীয় সময় ৩১ আগস্ট প্রথম প্রহরে কাবুল ছাড়েন যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেই সেনার ছবি প্রকাশ করেছে।
ছবিতে দেখা যায়, হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সি-১৭ সামরিক বিমানের দিকে এগিয়ে আসছেন এক সশস্ত্র সেনা। বিমানে পা রাখার আগ মুহূর্তে রাতের আঁধারে তোলা হয় সবুজাভ ছবিটি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংবাদমাধ্যম এনপিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান ভূখণ্ড ত্যাগ করা শেষ আমেরিকান সেনার নাম ক্রিস ডোনাহিউ। তিনি এইটিন এয়ারবর্ন কর্পসের ৮২তম এয়ারবর্ন ডিভিশনের কমান্ডার।
ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড থেকে সরবরাহ করা ছবিটি যখন তোলা হয়, তখন কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সামরিক ফ্লাইটে উঠছিলেন ডোনাহিউ। একই ফ্লাইটে চড়ে দেশে ফিরেছেন কাবুলে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রস উইলসনও।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ারসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি জায়গায় একযোগে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে সে বছর সামরিক অভিযান শুরু করেছিল তৎকালীন আমেরিকান প্রশাসন।
ডোনাহিউ ও উইলসনের কাবুল ত্যাগের মাধ্যমে চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটেছে দুই দশকের সেনা অভিযানের।
দীর্ঘ এ সময়ে আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আট লাখের বেশি সেনা। যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের দুই হাজার ৪৬১ জন। এদের মধ্যে আছে চলতি সপ্তাহে কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানো ১৩ আমেরিকান সেনাও।
নিহত এই সেনাদের অধিকাংশেরই বয়স আফগানিস্তান যুদ্ধের চেয়েও কম।
এক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। এই অধ্যায় হবে কূটনীতির।