অত্যাধুনিক রাইফেল আর বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিয়ে ব্যাংকে ঢোকে সশস্ত্র ডাকাতরা। কয়েকজন বেসামরিক মানুষকে জিম্মি করে বিপুল পরিমাণ নগদ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এতেই শেষ নয়, পালানোর সময় কয়েকজনকে জোর করে নিজেদের গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তদের দলটি। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের আরাসাতুবা শহরে।
ঘটনার আংশিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে দেখা যায়, কালো পোশাকে আপাদমস্তক ঢাকা একদল ডাকাত জিম্মিদের হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ব্যাংকের কমপক্ষে দুটি শাখায় লুটপাট চালিয়েছে ডাকাতরা। জিম্মিদের গাড়ির ছাদে উঠিয়ে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো শুরু করে তারা। চলন্ত গাড়ির ছাদ থেকে পিছলে পড়া ঠেকাতে কোনো রকমে ঝুলছিলেন নিরস্ত্র মানুষগুলো।
সে সময় সংঘাতে দুই বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রাণ যায় কমপক্ষে তিনজনের। নিহত অপরজন ডাকাতদলের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সন্দেহভাজন একজনকে, আহত হয়েছে আরও একজন।
সাও পাওলোর মিলিটারি পুলিশের কর্মকর্তা আলভারো ক্যামিলো জানান, আরাসাতুবায় ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় অংশ নিয়েছিল ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ২০ জনের বেশি ডাকাত। ১০টি গাড়ি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল তারা।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যেন ধাওয়া করতে না পারে, সেজন্য পালানোর সময় শহরজুড়ে বিস্ফোরক ফেলে যায় ডাকাতদল।
সব বিস্ফোরক খুঁজে বের করে তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত শহরের বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকার অনুরোধ করেছে পুলিশ।
ব্রাজিলে এমন ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ব্যাংকে সহিংস ডাকাতির সাক্ষী হয়েছে দেশটি।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্রাজিলের দরিদ্র মানুষের জন্য মহামারিকালীন যে কল্যাণমূলক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে, সেটাই লক্ষ্য ডাকাতদের। প্রকল্পের আওতায় মফস্বল শহরগুলোর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় প্রচুর পরিমাণ নগদ জমা হচ্ছে। সেসব অর্থ ছিনিয়ে নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ ডাকাতরা।
পুলিশ জানিয়েছে, আরাসাতুবার বাঙ্কো দো ব্রাসিল এসএ শাখায় প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ জমা করা হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে কিছু জানানো হয়নি।
ডাকাতদের সন্ধানে শহরটিতে সাড়ে তিন শ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযানে ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি হেলিকপ্টার।
গত ডিসেম্বরে কামেতা ও ক্রিসিউমা শহরে বাঙ্কো দো ব্রাসিল ব্যাংকেরই দুটি শাখায় একই কায়দায় ডাকাতি সংঘটিত হয়। সব ঘটনায় একই চক্র জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।