রক্তের মতো লাল পানিতে ভাসছে কয়েকটি জুতা- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ছবি সম্প্রতি বেশ ভাইরাল হয়েছে।
ছবিতে দাবি করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ছবিটি তোলা হয়।
ওই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনাসহ কমপক্ষে ১৭০ বেসামরিক আফগানের মৃত্যু হয়।
আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় ওই দিনই স্বীকার করে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা আইএস-খোরাসান।
ভাইরাল ছবির শিরোনামে একজন লিখেছেন, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে কাবুল। ফের রক্ত ঝড়ছে শহরটিতে। মনে রেখ, ঈশ্বর সব দেখছেন।’
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লিউএ) ভাইরাল ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধে বিপুলসংখ্যক মানুষের হতাহতের প্রতিবাদে প্রতীকী এক কর্মসূচিতে কাবুল নদী লাল রঙে রঞ্জিত করে একদল বিক্ষোভকারী।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে ওতাঘখবর টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে ইরানের একটি ওয়েবসাইটে ভাইরাল ছবিটি পাওয়া যায়।
ওই ওয়েবসাইটে বলা হয়, আফগানিস্তানে বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে প্রতীকী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাবুল নদীর একাংশে লাল রং ঢেলে দেয় প্রতিবাদী মানুষ।
ইরানের আরেকটি ওয়েবসাইট এএফ.শাফাকনা. কমেও একই ছবি মেলে।
তবে ওয়েবসাইট দুটিতে বিক্ষোভের সময় উল্লেখ ছিল না।
পরে পর্তুগিজ ওয়েবসাইট এক্সামি.কমে বিস্তারিত বিবরণসহ ছবিটি পাওয়া যায়।
এতে বলা হয়, জাতিসংঘ দাবি করেছে, ২০১৬ সালে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধে ১১ হাজার ৪০০ বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়।
জাতিসংঘের ওই দাবির এক সপ্তাহ পর ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতীকী বিক্ষোভের আয়োজন হয়।
বিক্ষোভকারীরা ওই দিন ২০০ কেজি ওজনের লাল রং কাবুল নদীতে ঢেলে দেন। এতে নদীটির একটি অংশ রক্তের মতো লাল রং ধারণ করে।
পরের দিন ১১ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে ওই বিক্ষোভের এক ভিডিও আপলোড করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘আফগানিস্তান ১৪০০’ নামের বিক্ষোভটির নেতৃত্ব দেন অধিকারকর্মী শেহেরজাদ আকবর।
আকবর ভিডিওতে বলেন, ‘গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার আফগান বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের ঘটনা প্রতীকীভাবে দেখাতে চেয়েছিলাম আমরা।
‘রক্তের বন্যা ছাড়া অন্য কোনোভাবে ওই ঘটনার দৃষ্টিগোচর উপস্থাপন হতে পারত না।’