তালেবানের সঙ্গে কাবুলে প্রথমবারের মতো বৈঠক হয়েছে তুরস্কের প্রতিনিধি দলের। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এমনটি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার বার্তাসংস্থা এএফপি ও টলোনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকটি কাবুল বিমানবন্দরের সামরিক বিভাগে হয়েছে যেখানে তুর্কি দূতাবাস অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়।
এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইসলামপন্থি তালেবানের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছি, যা সাড়ে তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছে। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আবার এই ধরনের বৈঠক করার সুযোগ পাবো।’
এসময় তালেবানের সঙ্গে তুরস্কের সম্পৃক্ততা নিয়ে সমালোচনার জবাবে এরদোয়ান বলেন, এই অঞ্চলের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মধ্যে আঙ্কারা নীরব ভূমিকা পালন করতে পারে না।
এরদোয়ান বলেন, আমাদের প্রত্যাশা বা তালেবানের আকাঙ্ক্ষা, বৈঠক ও আলোচনা ছাড়া স্পষ্ট জানা সম্ভব নয়। এটা কূটনীতিরই অংশ।
এর আগে, কাবুলের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরের সুরক্ষা ও পরিচালনায় সাহায্য করার পরিকল্পনা নিয়েছে তুরস্ক।
সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র যুক্তরাষ্ট্র লজিস্টিক, আর্থিকসহ অন্যান্য সহায়তা দিলে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিতে রাজি তুরস্ক।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মঙ্গলবার এ কথা জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনা নিয়ে তুরস্কের প্রস্তাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় এরদোয়ান সরকারের।
কিন্তু বুধবার আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে আঙ্কারা, যার অর্থ এরদোয়ানের সরকার এই সহায়তা পরিকল্পনাকে বাদ দিয়েছে।
তুরস্কের এ পরিকল্পনার বিষয়ে তালেবান এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান তুরস্কের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কঠোর হাতে আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান।
যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ২০০১ সালে তালেবানকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির ক্ষমতা থেকে সরায়।
এরপর থেকে গত ২০ বছর ধরে পশ্চিমা দেশ-সমর্থিত আফগানিস্তান সরকারকে পতনের মাধ্যমে দেশটিতে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই করছে তালেবান।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি প্রত্যাহারের লক্ষ্য নিয়ে মাসখানেক ধরে বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছে।